সবরের মাস রমজান। ধৈর্য ও ত্যাগের মাস রমজান। মহান আল্লাহ রোজা দ্বারা রোজাদারকে এই ত্যাগ ও মহাত্বের শিক্ষাই দিতে চান। সুতরাং ধৈর্যের বিষয়টি মূলের থেকে যেনে নেওয়া জরুরী।
ধৈর্যের প্রধান তিনটি ক্ষেত্র। প্রথমত: নেক কাজ করার ক্ষেত্রে সবর। প্রত্যেকটি নেক কাজে কিছুটা দৈহিক এবং আর্থিক কষ্ট পোহাতে হয়। শীতের দিনে ঠান্ডা পানি দ্বারা অজু করে নামাজে যাওয়া। নিজের রক্ত ঘাম পানি করে উপার্জির পয়সা খরচ করে জাকাত ও হজ্ব আদায় করা এই সবই শারীরিক বা মানুষিক কষ্টের বিষয়। যা ইবাদত বা নেক কাজ করতে গেলে আপনাকে বরদাশত করতেই হবে।
দ্বীতিয়ত: গোনাহ বজর্নের জন্য সবর: বাহ্যিকভাবে গোনাহের কাজে কিছুটা আত্মতৃপ্তি অনুভব হয়। ক্ষণিকের জন্য দেহ ও মনকে কিছুটা আন্দলিত করে। কিন্তু পরক্ষনেই নেমে আসে অনুশোচনার কালো আধার। এই ক্ষণিকের সুখ আনন্দের পরওয়া না করে নিজেরকে দৃয় রাখার নামই হল সবর।
তৃতীয়: মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আপাতত সকল মুসিবতের উপর সবর। কেননা মুমিন মুসলমানের উপর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে যে কোন মুসিবত আসে এতে তার জন্য ইহকালীন অথবা পরকালীন কল্যান নিহিত থাকে। সুতরাং সে যখন এর উপর সবর করে তা তার জন্য বিরাট কল্যানের কারণ হয়।
পবিত্র রমজানে রোজার মাধ্যমে একজন রোজাদারকে এই তিনও প্রকার সবরের অনুশীলন করানো হয়। প্রথমত: রোজাদার ব্যক্তি তার নাগালের মধ্যেই সব ধরনের খাবার ও পানীয়র ব্যবস্থা থাকা সত্বেও নিজেকে তা থেকে বিরত রাখে। যা ইবাদত বা নেকী অর্জনের জন্য তার বড় আত্মত্যাগ। নিজের বৈধ সুশ্রী স্ত্রী সামনে উপস্থিত থাকা স্বত্বেও নিজেকে তার থেকে দুরে রাখে। এটাও বড় সবর।
মোটকথা সবর বা ধৈর্য মানব জীবনের একটি অন্যতম অবলম্বন। যা রোজার মাধ্যমে পূর্নমাত্রায় অর্জন করা সম্ভব। আর রমজান মাসে তা অর্জনের জন্য প্রচুর অনুশীলনের ক্ষেত্র রয়েছে। তাই প্রিয় নবীজি সা. বলেন, রমজান সবারের মাস। আর সবরের প্রতিদান হল জান্নাত। (বাইহাক্বী- ৫/২২৪)
(লেখক : শিক্ষক, ইমদাদুল উলুম রশিদিয়া মাদরাসা, ফুলবাড়ী গেট, খুলনা )
খুলনা গেজেট/এমএম