রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষে চলছে ভোট গণনার কাজ। ভোট গণনা শেষ হয়েছে, এমন ২০০ কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফল জানা গেছে। এতে বড় ব্যবধানে এগিয়ে আছেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা (লাঙ্গল প্রতীক)। এর আগে সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোট গ্রহণ। তবে ভোটারদের আঙ্গুলে ছাপ না মেলায় ভোটগ্রহণে ধীর গতির কারণে কেন্দ্রের ভেতর থাকা ভোটারদের রাত পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়।
ফলাফলে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা (লাঙ্গল প্রতীক) সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৬ হাজার ১৮৪ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল (হাতপাখা) পেয়েছেন ৪৩ হাজার ৬৮৯ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলন (হাতি) পেয়েছেন ২৯ হাজার ৫৮০ ভোট। আওয়ামী লীগের হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া (নৌকা) ২০ হাজার ৪৫ ভোট পেয়ে চতুর্থ অবস্থানে আছেন।
রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মঙ্গলবার রাত সোয়া ৯টার দিকে বেসরকারিভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আবদুল বাতেন।
এ নির্বাচনে ৯ মেয়র প্রার্থীসহ মোট ২৬০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ৩৩ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ১৮৩ জন এবং ১১ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ৬৮ জন।
নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন বছর শুধু নির্বাচনী বছরই নয়; দেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবেও চিহ্নিত হতে পারে। ২০২৩ সাল নির্বাচন কমিশন, সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল সবার জন্য একটি পরীক্ষার বছর। কারণ ২০২৪ সালের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন হলেও সব প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে ২০২৩ সালেই।
একটি অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্নিষ্ট সবার আন্তরিকতা ও নিরপেক্ষতার ওপরই ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। তারা বলছেন, রংপুরের নির্বাচনের মাধ্যমেই ইসি ও সরকারের নিরপেক্ষতা যাচাই হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২৮ জুন ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশন গঠনের পর ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওইবার এক লাখ ৬ হাজার ২৫৫ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পেয়েছিলেন ৭৭ হাজার ৮০৫ ভোট এবং বিএনপি নেতা কাওসার জামান বাবলা পেয়েছিলেন ২১ হাজার ২৩৫ ভোট।
২০১২ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭৪২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭৯ হাজার ১২৮ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৭৮ হাজার ৬১৪ জন।
দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর দলীয় প্রতীকে অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এক লাখ ৬০ হাজার ৪৮৯ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু পেয়েছিলেন ৬২ হাজার ৪০০ ভোট এবং বিএনপির প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা পেয়েছিলেন ৩৫ হাজার ১৩৬ ভোট। ওই বছর ভোটার সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৯৬ হাজার ৩৫৬ ও নারী এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৩৮ জন।
খুলনা গেজেট/ এসজেড/এমএম