খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

যৌন হেনস্তার অভিযোগে ঢাবির অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষকে অব্যাহতি

গে‌জেট ডেস্ক

নিজ বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষকে।

গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত বিভাগটির অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও সম্প্রতি এটি প্রকাশ পায়।

সেই সভার কার্যবিবরণী থেকে দেখা যায়, বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি শাস্তির সিদ্ধান্ত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভবিষ্যতেও বিশ্বজিৎ ঘোষকে কোনো অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে যুক্ত করা হবে না, সিঅ্যান্ডডি ও অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় তাকে ডাকা হবে না, তার নামে বরাদ্দকৃত বিভাগীয় কক্ষ বাতিল করা হবে এবং বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে কি না সেটি অভিযোগকারীর সম্মতি সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে সভায় জানানো হয়।

কার্যবিবরণীতে বলা হয়, তদন্তকালীন অ্যাকাডেমিক কমিটির এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের আওতা সম্পর্কে কার্যবিবরণীতে বলা হয়, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের মধ্যে পড়বে সব ধরনের ক্লাস নেয়া, পরীক্ষায় প্রত্যবেক্ষণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, এমফিল-পিএইচডি গবেষণা তত্ত্বাবধায়ন, পরীক্ষা কমিটির কাজে অংশ নেয়াসহ অন্যান্য।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত মার্চ মাসে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনেন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। পরে ওই ছাত্রী বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক বরাবর একটি অভিযোগ জমা দিলে গত ২৯ মার্চ দুপুর ১২টায় অ্যাকাডেমিক কমিটির এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার বিষয়ে কার্যবিবরণীতে বলা হয়, সভায় বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে আসা যৌন-নিপীড়নের লিখিত অভিযোগটি উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি লিখিত অভিযোগপত্রটি পাঠ করে শোনান। এরপর কমিটির সদস্যরা এটি নিয়ে আলোচনা করেন।

বিবরণীতে বলা হয়, ওই সভায় উপস্থিত থাকা অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ তার ভুল হয়েছে বলে মনে করেন এবং তিনি সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও করুণা ভিক্ষা করেন। তবে অ্যাকাডেমিক কমিটির সদস্যরা তার মাধ্যমে সঙ্ঘটিত অতীতের বিভিন্ন যৌন নির্যাতনের ঘটনার কথা উল্লেখ করে তার এই প্রার্থনা গ্রহণ করেননি।

বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, ক্ষমা প্রার্থনা ও করুণা ভিক্ষার ঘটনায় তার অপরাধ স্বীকারের বিষয়টিও প্রমাণিত হয়।

তবে অভিযোগটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলছেন অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ।

তিনি বলেন, ‘আমার সাফল্য এবং সুনামে ঈর্ষান্বিত হয়ে ওই শিক্ষার্থীর মাধ্যমে কোনো মহল এ কাজ করিয়েছে বলে আমি মনে করি। আমি আরও মনে করি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন শিক্ষক হওয়ার কারণে হয়তো কোনো মহল আমার বিরুদ্ধে এ কাজ করিয়েছে।’

বিশ্বজিৎ ঘোষ এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে সত্য ঘটনা প্রকাশের আহ্বান জানান।

সার্বিক বিষয়ে বাংলা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক, অধ্যাপক ড. মো শাহাজাহান মিয়া এবং বায়তুল্লাহ কাদেরীকে ফোন দেয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

প্রসঙ্গত, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ ২০১৭ সালের ১১ জুন থেকে টানা চার বছর সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

খুলনা গেজেট/ এস আই

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!