Bin Mishal নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে সৌদি প্রবাসীর কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে আলম শেখ নামে বাংলাদেশী এক প্রবাসী ১ মাসের বেতন খুইয়ে চাকুরি হারিয়ে মক্কায় হারাম শরীফের পার্শ্ববর্তী একটি মেসে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। যে ফেসবুক আইডির মাধ্যমে প্রতারক চক্রের সদস্যের সাথে তার পরিচয়, সেই আইডি’র মেসেঞ্জারে তার ঠিকানা চাইলে প্রতারণাকারী Bin Mishal official আইডি থেকে তাঁকে মেসেজ দেয় আমার এই আইডি’র নামে অগণিত ভূয়া পেজ আছে। টাকা লেনদেন করবেন না।
আলম শেখ নামে ওই যুবক সৌদিআরবের মক্কা থেকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, দেড় বছর আগে আমি রুটি রুজির তাগিদে সৌদি আরবের আল কাছিম শহরের বুরাইদাহ এসে স্বল্প বেতনে একটি কোম্পানিতে কাজ নেয়। সম্প্রতি সৌদিতে বৈধভাবে থাকার আমার রেসিডেন্সিয়াল পারমিট আকামার ডেট এক্সপায়ার হয়ে যায়। এমতাবস্থায় প্রতারক চক্র Bin mishal নামে একটা ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিও কলে কথা বলে আমাকে কফালা করার আশ্বাস দিয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং বিনিময়ে সৌদি ১২৭০ রিয়াল দাবি করে যা বাংলাদেশি টাকায় ৩৬,৮৩০ টাকা। চক্রটি টাকাটা বাংলাদেশের 01859-167835 (পারসোনাল) নাম্বারে বিকাশ করতে বলে। আমি সরল মনে কফালা হওয়ার লোভে পড়ে ২৩ সেপ্টেম্বর আনুমানিক সন্ধ্যা ৭,১৭ মিঃ হতে ৭,১৮ মিঃ’র মধ্যে বাংলাদেশের 01743-898991 (বিকাশ এজেন্ট নাম্বার) হতে ৩০,০০০ টাকা এবং একই এজেন্ট এর অন্য একটা পারসোনাল নং যার শেষের ডিজিট 7606 থেকে ৬,৮৩০ টাকা সর্বমোট ৩৬,৮৩০ বিকাশ করে দেই। টাকাটা পাওয়ার পর প্রতারক চক্র আমার সাথে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
আমি ঠিকানা চাইলে Bin Mishal Official পেজ থেকে আমার মেসেঞ্জারে প্রতারক মেসেজ লিখে পাঠান এই বলে যে, “আমার নামে ভূয়া Imo, Whatsapp এর মাধ্যমে প্রতারণা চলছে। প্রতারণা থেকে সাবধান। আমি Imo, Whatsapp কিংবা টিকটকে টাকা পয়সা দাবি করি না, তাই টাকা চাইলে কেউ দিবেন না। সাবধান কেউ মেসেঞ্জারে লেনদেন করতে যাবেন না। আমার নামে ভুয়া পেইজে নক দিয়ে অনেকেই প্রতারিত হয়েছে। Bin Mishal official এই নামে অগণিত ভুয়া পেজ আছে । তাই নিরাপদ তথ্যের জন্য চেক করে নিবেন আমার পেজের ফলোয়াররা। আমার এই পেজে বর্তমানে ফলোয়ার ৩ লাখ ২৬ হাজার। জরুরী প্রয়োজনে whatsapp অথবা কল করুন 0550893716, 0595505124″।
শেখ আলম বলেন, প্রতারিত হয়ে আমি হতাশ হয়ে পড়েছি এবং বাড়ীতে পরিবার বাচ্চারা পুরামাসের সংসার খরচ হারিয়ে ভীষণ সমস্যায় পড়েছি। ঘটনাটা লজ্জায় কাউকে বলতে পারছিনা। ওরা ফেক আইডি ব্যবহার করে আমার আকামা এক্সপেয়ার বিধায় ব্যাংক কার্ড বন্ধ আছে এজন্য বাংলাদেশের বিকাশ পারসোনাল নাম্বারে টাকা দিতে বলেছিলো। তাহলে নাকি ওরা পেয়ে যাবে। টাকা নেওয়ার পর মক্কায় ওদের অফিসে আসতে বলেছিলো। ওদের দেওয়া ঠিকানা মতে মক্কায় এসে দেখি ওদের আইডি বন্ধ এবং ভুয়া অফিসের ঠিকানা। আমি আমার পুরানো কর্মস্থল ত্যাগ করে মক্কায় এসে এখন বিপদে পড়েছি। না পারছি আকামা রিনিউ করতে, না পারছি দেশে পরিবারের খরচ পাঠাতে। একটা বাঙালি মেসে কোন রকম মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে। আমার স্থায়ী নিবাস খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার পানিগাতি গ্রামে।
এ ব্যাপারে আমার ছোট ভাই মোঃ মনিরুজ্জামান মনির বাদী হয়ে দিঘলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে দিঘলিয়া থানার এসআই শহিদুল ইসলামের কাছে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর প্রতারনার মাধ্যমে টাকা নেওয়া উক্ত বিকাশ নম্বরের এনআইডি নং চেয়ে আইসিটিতে পাঠানো হয়েছে। আইডি নাম্বার আসলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এইচ