খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ মাঘ, ১৪৩১ | ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  বিকালে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা
  যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় ৬ আরোহি নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত, হতাহতের শঙ্কা
  আজ থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে বাড়ল ১ টাকা

যুদ্ধবিরতির পরও গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে ৩৫৪ মরদেহ উদ্ধার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ থামলেও দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। যুদ্ধবিরতির পর ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রতিদিন কয়েক ডজন করে মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাবে, গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে গাজায় তিন শতাধিক মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারের বেশি মরদেহ চাপা পড়ে রয়েছে। এসব মরদেহের একটা বড় অংশই পচে–গলে গেছে।

ইসরায়েলের ১৫ মাসের নির্বিচার হামলায় গাজার ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন লক্ষাধিক। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো উপত্যকা। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিরা বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। এরপর প্রতিদিনই ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধার হওয়ার খবর আসছে।

জাতিসংঘের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তাসংক্রান্ত সংস্থা (ওসিএইচএ) গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে ৩৫৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২২ থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ১৭১টি মরদেহ। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মানুষের খোঁজে উদ্ধার অভিযান চলছে। উদ্ধারকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারাও হাত লাগাচ্ছেন।

গাজার জরুরি সেবা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাশালের আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অন্তত ১০ হাজার মরদেহ চাপা পড়ে আছে। এসব মরদেহ ১০০ দিনের মধ্যে উদ্ধারের আশা করা হচ্ছে। তবে বুলডোজারসহ অন্যান্য সরঞ্জামের সংকটে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ।

সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েলের হামলায় সংস্থাটির ৪৮ শতাংশ কর্মী নিহত, আহত অথবা বন্দী হয়েছেন। ইসরায়েলের হামলায় তাদের ৮৫ শতাংশ যানবাহন ও ২১টি কার্যালয়ের মধ্যে ১৭টি ধ্বংস হয়েছে।

এরপরও জীবিত মানুষ ও মরদেহের খোঁজে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে সংস্থাটি। বিবিসিতে প্রকাশিত কিছু ছবিতে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধারকর্মীরা মৃত শিশু ও মানুষের খণ্ডাংশ উদ্ধার করছেন। অনেকটা খালি হাতে উদ্ধারকাজ করতে হচ্ছে তাঁদের।

গাজা শহরে কাজ করা সংস্থাটির একজন উদ্ধারকর্মী আবদুল্লাহ আল-মাজাদালাবি বলেন, প্রতিটি সড়কে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির পরও ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষ আটকে থাকার ফোন আসছে প্রতিদিন।

মালাক কাসাব নামের গাজা শহরের এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, এখনো উদ্ধার না হওয়া মরদেহের মধ্যে তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্য রয়েছেন। মরদেহগুলো উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

ধ্বংসস্তূপ সরাতেই লাগবে ২১ বছর

ইসরায়েলের হামলায় গাজায় যে ধ্বংসস্তূপ তৈরি হয়েছে, এর পরিমাণ পাঁচ কোটি টনের বেশি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ধ্বংসস্তূপ সরাতে ২১ বছর লাগবে। আর খরচ হবে অন্তত ১২০ কোটি মার্কিন ডলার। ইসরায়েলের হামলায় গাজার বেশির ভাগ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।

গত বছর জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় ধসে পড়া বাড়িঘর পুনর্নির্মাণে অন্তত ২০৪০ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। তবে এটা কয়েক দশকও দীর্ঘায়িত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, গাজায় আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। উপত্যকাটির অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে ১০ থেকে ১৫ বছর সময় লাগবে।

আজ মুক্তি পাচ্ছেন ৩ জিম্মি ও ৯০ বন্দী

ইসরায়েল ও গাজার সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় আজ শনিবার আরও তিন জিম্মি মুক্তি পাচ্ছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আজ ইসরায়েলের কারাগার থেকে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে।

হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেডস গতকাল জানায়, যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী (আজ) তিন ইসরায়েলিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাঁরা হলেন ওফার কালদেরন, কেইথ সিজেল ও ইয়ারডেন বিবাস। আর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বিবৃতিতে জানায়, জিম্মিদের ছেড়ে দেওয়ার পর ৯০ ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেবে তারা।

গাজার তথ্যকেন্দ্র জানিয়েছে, আজ যে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পাচ্ছেন, তাঁদের ৯ জনকে যাবজ্জীবন ও বাকি ৮১ জনকে দীর্ঘ মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিল ইসরায়েল।

যুদ্ধবিরতি শুরুর পর এর আগে তিন ধাপে ১৫ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েল ৪০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!