ফিলিস্তিনের গাজার রাফায় শরণার্থী তাঁবুতে গত রোববার রাতে চালানো হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বোমা ব্যবহার করেছিল ইসরায়েল। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, গত রোববার রাতের ওই হামলায় ২৩ শিশু, নারী, বয়োবৃদ্ধসহ কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন ২০০ জনের বেশি। নিরাপদ ঘোষিত এলাকায় এই হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।
ঘটনাস্থলে থাকা বোমার ধ্বংসাবশেষ বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা পর্যালোচনা করে দেখেন, হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা জিবিইউ-৩৯ বোমা ব্যবহার করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী।
সিএনএনের পাওয়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, রাফায় তাঁবু দিয়ে তৈরি আশ্রয়কেন্দ্রের বড় একটি অংশে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। রাতে চালানো ওই হামলা থেকে নিজেদের রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করছেন অনেক নারী-পুরুষ ও শিশু। ধ্বংসস্তূপ থেকে শিশুসহ অনেকের মরদেহ বের করে আনছেন উদ্ধারকারীরা।
আল-জাজিরাসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, ওই হামলার ঘটনায় অনেকেই জীবন্ত পুড়ে মারা যান। বোমার আঘাতে শিশুদের শরীর ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শিশুর মরদেহও দেখা যায়।
বিস্ফোরক অস্ত্রবিশেষজ্ঞ ক্রিস কব-স্মিথ স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার সিএনএনকে বলেন, জিবিইউ-৩৯ বোমা তৈরি করে মার্কিন কোম্পানি বোয়িং। কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানার জন্য এ বোমা ব্যবহার করা হয়। এতে আশপাশের ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলক কম হয়। তবে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাবেক এই আর্টিলারি অফিসার বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যে কোনো বোমার ব্যবহারে এমনকি এই আকারের হলেও সব সময়ই বড় ধরনের ঝুঁকি থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়কারী দলের জ্যেষ্ঠ সদস্য ট্রেভর বল রাফায় ব্যবহার করা বোমার ধ্বংসাবশেষ দেখে এটিকে জিবিইউ-৩৯ বলে শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, এই বোমার ওয়ারহেড অংশ অন্য বোমার চেয়ে আলাদা এবং এর গতিপথ নির্দেশক সরঞ্জাম ও ডানা একেবারেই ব্যতিক্রমী।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৮৪ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৩৬ হাজার ১৭১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮১ হাজার ৪২০ জন।