যশোরের চৌগাছায় বকুল হোসেন (৪৫) নামে এক প্রবাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বেড়গোবিন্দুর গ্রামের পুকুরের পাড় থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
নিহত বকুল একই গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। তবে কি কারণে তার এই অস্বাভাবিক মৃত্যু তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। ঘটনাস্থল পুলিশের উধ্বতন কমকর্তারা পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, বকুল হোসেন পেশায় কৃষক হলেও প্রায় এক যুগ মালায়েশিয়ায় প্রবাসী ছিলেন। গত প্রায় দুই বছর তিনি বাড়িতে এসেছেন। রোববার রাতে তিনি স্ত্রী সন্তানদের বলেন আমি মাছ ধরতে যাচ্ছি। এ কথা বলে বাড়ি থেকে তিনি বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। পরিবারের লোকজন ওই রাতে অনেক খোঁজাখুজি করেও বকুলের হদিস পায়নি। সোমবার সকালে পুনরায় পরিবারের লোকজন খুঁজতে বের হন। একপর্যায়ে মশ্মিমপুর মোড়ের অদুরে বেড়গোবিন্দপুর গ্রামের শিমুলের পুকুর পাড়ে বকুলের মরাদেহ দেখতে পায় নিহতের ছেলে জীবন হোসেন। এ সময় তার চিৎকারে স্বজন ও স্থানীয়রা ছুটে আসেন।
খবর পেয়ে চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের ছোট ভাই বিপুল হোসেন জানান, রাতে ভাই মাছ ধরার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় এবং সারা রাতই নিখোঁজ ছিলো। বিকেল চারটার দিকে এই পুকুরের পানির ধারে মরদেহ তার ছেলে জীবন দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দেয়। কি কারনে তার মৃত্যু হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না।
নিহত বকুল হোসেনের ছেলে জীবন হোসেন বলেন, আমার বাবার মাছ ধরার খুুবই নেশা ছিলো। সুযোগ হলেই বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ে মাছ ধরতে যেতেন।সোমবার বিকেলে এই পুকুর পড়ে আব্বার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। আমার ধারণা, মাছ ধরার সময় পুকুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে তার মৃত্যু হয়েছে। কেননা পুকুরের চারপাশে বিদ্যুতের তার রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পুকুর মালিক শিমুল হোসেন চোর ও শিয়ালের উপদ্রপ হতে মাছ রক্ষায় গোটা পুকুরে পানির উপরে বিদ্যুৎ লাইন দিয়ে রেখেছে। অনেকের ধারনা নিহত বকুল হোসেন ওই পুকুরে মাছ ধরতে যেয়ে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হন এবং তাতেই মৃত্যুবরণ করেন। তার কিছুটা দূরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে একটি শিয়ালও মারা যায় বলে জানান স্থানীয়রা।
চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করি। নিহতের স্ত্রী ও ছেলের ভাষ্যমতে, তিনি মাছ ধরতে যেয়ে ওই পুকুরের বিদুৎ স্পৃষ্টে মারা গেছেন। তবে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে মৃত্যু না অন্য কোন কারণ আছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর রহস্য বের হয়ে আসবে।
এদিকে, বিকেলে ঘটনাস্থল যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) আহসান হাবিব পরিদর্শন করেছেন।
খুলনা গেজেট/এএজে