যশোরে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও আটকের অভিযোগ উঠেছে। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ২৫ নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা ও প্রায় ৪০জনকে আটক করেছে পুলিশ। অবশ্য জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেছেন, যশোর থেকে ইতিমধ্যে ১০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় পৌছেছেন।
বুধবার মধ্যে রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের ৪০ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। একই সাথে তিন যুবদল নেতার বাড়িতে পুলিশের বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগ করেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, রাজধানী ঢাকায় মহাসমাবেশে না যেতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করার জন্য এ আটক অভিযান চালানো হচ্ছে। আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে যশোর জেলা থেকে ইতিমধ্যে ১০ হাজার নেতাকর্মী পৌছে গেছেন বলে তিনি জানান। আরও পাঁচ হাজার নেতাকর্মী রয়েছেন যাওয়ার অপেক্ষায়।
জেলা বিএনপি সূত্র জানায়, বুধবার মধ্য রাত থেকে যশোর সদর, বাঘারপাড়া ও অভয়নগর উপজেলায় পুলিশি ধরপাকড় অভিযান শুরু হয়। এছাড়া বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এই দুটি উপজেলা এলাকা থেকে ৪৪ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এসব নেতাদের আটকের পর বিভিন্ন মামলায় আটক দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আটকৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, যশোর সদরের চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল ওহাব, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক নিজামুদ্দিন মোল্লা, লেবুতলা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম, ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলাল শেখ, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আবুল বিশ্বাস, যশোর নগর বিএনপি নেতা কাজী ইসরাফিল, রফিকুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
এছাড়া, অভিযোগ করা হয়েছে নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মাসুমসহ ২৫ জনের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। একই সাথে জেলা যুবদলের তিন নেতার বাড়িতে পুলিশের বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। বাড়িঘর ভাঙচুর হওয়া নেতারা হলেন, জেলা যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক রাজন হাওলাদার মানিক, ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সাগর, ৭ নম্বর ওযার্ড যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইসলাম শামীম ।
জেলা যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক রাজন হাওলাদার মানিকের দাবি, বুধবার রাত দেড় টার দিকে সাদা পোশাকে কয়েকজন পুলিশ তাকে আটকের জন্য বাড়িতে যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি তাৎক্ষনিক পালিয়ে যান। পরে তাকে না পেয়ে বাড়ির প্রধান ফটক পুলিশ ভাঙচুর করে চলে যায়।
এ বিষয়ে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ঢাকায় আমাদের মহাসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা ধরণের পুলিশি ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অনেক নেতাকর্মীর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা নেই, অনেকেই জামিনে রয়েছেন। তারপরও তাদের গণগ্রেফতার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কোনোভাবেই এ মহাসমাবেশ আটকানো যাবে না, মানুষ স্রোতের মতো মহাসমাবেশে যাচ্ছে ও যাবেই।
এসব বিষয়ে যশোর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন বলেন, যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা রয়েছে। আদালতে হাজির না হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আদালত থেকে ওয়ারেন্ট হওয়ায় তাদেরকেই আটক করা হচ্ছে। কোনো ভাঙচুর কিংবা অন্যসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/কেডি