যশোরে আলোচিত পঙ্গু হাসপাতালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ব্যবসায়ী মফিজুর রহমান হত্যার ঘটনায় ম্যানেজারসহ চারজনকে ফের হেফাজতে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যার বিষয়ে সত্যতা পেয়েই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের হেফাজতে নেয়। যদিও তাদের বিষয়ে কোন সংস্থা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের কারণেই হত্যার ঘটনার তাদের আটক করা হয়েছে হয়েছে সূত্রে জানা গেছে।
আটককৃতরা হলো, পঙ্গু হাসপাতালের ম্যানেজার আতিয়ার রহমান, লিফটম্যান আব্দুর রহমান ও শিমুল এবং ইলেক্ট্রিশিয়ান কবির হোসেন।
যশোর শহরের মুজিব সড়ক রেলগেটের বহুলালোচিত পঙ্গু হাসপাতালে ঝিনাইদহের ব্যবসায়ী মফিজুর রহমানকে ৩১ মার্চ খুন করা হয় বলে নিহতের পরিবার কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছিল। এতে করে পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন পঙ্গু হাসপাতালের সত্ত্বাধিকারী ডাক্তার এইচএম আব্দুর রউফ।
হাসপাতালের লিফটের আন্ডার গ্রাউন্ড থেকে লাশটি উদ্ধারের পরে তার বুকের উপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এক হাত লম্বা কাটা রক্তাক্ত জখম ছিল। শুধু তাই নয়, তার হাতে পায়েসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিলো। বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে ডাক্তার আব্দুর রউফ বিভিন্ন দফতরে দেনদরবার ও টাকার লেনদেন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপরেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না তার। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আঘাত জনিত কারণে মৃত্যুর তথ্য আসায় তার পার পাওয়ার সুযোগ থাকছে না।
এদিকে, এ ঘটনায় পত্রিকার সংবাদের সূত্র ধরে পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত করছে র্যাব সদস্যরা। এরই ভিত্তিতে সোমবার ভোররাতে এ হত্যাকান্ডে আটক হয়েছে পঙ্গু হাসপাতালের ম্যানেজার আতিয়ার রহমান। একইদিনে আটক হয়েছে দু’জন লিফটম্যান আব্দুর রহমান ও শিমুল এবং ইলেক্ট্রিশিয়ান কবির হোসেন।
এরআগে গত ২ এপ্রিল ওই হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধারের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ম্যানেজার আতিয়ার রহমানসহ ৮/১০ জনকে হেফাজতে নিয়েছিল। কিন্তু দেন দরবারের মাধ্যমেই তারা ছাড়া পান।
অভিযোগে জানা যায়, ডাক্তার আব্দুর রউফ দীর্ঘদিন পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসার নামে গলাকাটা বাণিজ্য করছেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগী ও স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেবার অভিযোগ রয়েছে এ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনার দিন ৩১ মার্চ দুপুরে যখন মফিজুর রহমানের সাথে ডাক্তার রউফের বাকবিতন্ডা হয়। তখন ওই সন্ত্রাসীদের ডেকে আনে ডাক্তার রউফ। সজলের নেতৃত্ব বাপ্পি, আশিক, শিমুল, রমজান ও মৃদুলসহ একদল সন্ত্রাসী এসে মফিজুর রহমানকে হাসপাতালের গেট থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় রায়পাড়ায়। সেখানকার এক আইনজীবীর বাড়ির দ্বিতীয়তলায় আটকে রেখে মফিজুর রহমানকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পঙ্গু হাসপাতালে আনা হয়। এখানে তার মৃত্যু হলে লিফটের নিচে লাশ ফেলে দেয়া হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাজী আবু জুবাইর বলেন, মফিজুর রহমানের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যার তথ্য আসায় বিভিন্ন দিক নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই সবকিছু খেলামেলাভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না। খুব দ্রুতই হত্যার প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই