যশোরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি লাল্টু শার্শা উপজেলার সন্মন্ধকাঠী গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে। বৃহস্পতিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক টিএম মুসা এ আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামি লাল্টুর সাথে যশোর সদর উপজেলার মাহিদীয়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর মেয়ে ঝর্ণা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ঝর্ণাকে অত্যাচার নির্যাতন করতে থাকে লাল্টুসহ তার পরিবারের সদস্যরা। এরপর স্বামী এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এ টাকা না পেয়ে অত্যাচারের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। এর মাঝে তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।
এক পর্যায়ে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ঝর্ণার পরিবারের পক্ষ থেকে মাহদিয়া গ্রামে ৫ শতক জমির উপর লাল্টুকে ঘর করে দেয়। পরে লাল্টু স্ত্রী সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস শুরু করে। এর কয়েক মাস পরই ফের লাল্টু যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারপিট শুরু করে। পরে ২০০৯ সালের ২৯ জুন লাল্টু জানায়, ঝর্ণা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়। পরে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে ঝর্ণা আত্মহত্যা করেনি। মাথায় পেরেক দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
ওই বছরের ৭ নভেম্বর এ ঘটনায় ঝর্ণার ভাই আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে কোতয়ালি মডেল থানায় যৌতুকের দাবিতে মারপিট ও হত্যার অভিযোগে লাল্টু, তার পিতা আতিয়ার ও মা রিজিয়া বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিটে লাল্টুর বাবা ও মাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। বৃহস্পতিবার এ মামলার রায়ে ঘাতক লাল্টুকে আদালত যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম