যশোরের লেদমিস্ত্রি রিপন হত্যায় জড়িত খড়কির ফরিদকে আটক করেছে পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ি সদস্যরা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রেজাউল করীমের নেতৃত্বে একটি টিম মঙ্গলবার বিকেলে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার মাছরাঙ্গা গ্রামের ফরিদের আত্বীয় বাড়ি থেকে তাকে আটক করে।
বুধবার দুপুরে খড়কি কবরস্থান থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে সে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহমেদ তার জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আটক ফরিদ হোসেন খড়কী পীড়বাড়ি এলাকার শামসুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, আটকের পর ফরিদ জানিয়েছে ছাত্রাবাস নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল দুই গ্রুপের মাঝে। এরই মাঝে ফরিদ পক্ষ রিপনদের ভয়ে এলাকা ছাড়া ছিল। ঘটনার দিন ফরিদসহ এ মামলার অন্য আসামিরা রেলগেটে ঘুরতে বের হয়। এ সময় রিপন, মুস্তাক, লিপটন, বিপুলসহ আরো কয়েকজন তাদেরকে ধাওয়া করে। এরমধ্যে রিপন একজনকে চাকু মারে। এরপর ফরিদ নিজেসহ সাকলাইন, ইমন, রানা, বিল্লাল, হাসিব, দেলো, পিচ্চি রাজাসহ আরও কয়েকজন রিপনকে ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে মুজিব সড়কের বেবীসপের সামনে রিপন পড়ে যায়। এসময় তাদের সবার কাছেই চাকু ছিল। যে যার মত তারা রিপনকে ছুরিকাঘাত করে। এমনকি ফরিদও বার্মিজ চাকু দিয়ে রিপনে দুই রানে দুটি ছুরিকাঘাত করেছে বলে জানিয়েছে। পরে ফরিদ, বিল্লাল ও সাকলাইন একই সাথে সাতক্ষীরার দিকে চলে যায়। তাদের মধ্যে সাকলাইন কলারোয়ায় নেমে যায়। অন্যরা সাতক্ষীরায় চলে যায়। ফরিদকে তার মামাবাড়ি মাছরাঙ্গা গ্রাম থেকে আটক করে পুলিশ।
উল্লেখ, গত ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মুজিব সড়কের বেবি ফ্যাশনের সামনে সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে রিপন ও তার বন্ধুরা জখম হয়। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেল দায়িত্বরত চিকিৎসক রিপনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন নিহত রিপনের মা রূপবান বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অপরিচিত ৫/৭ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুরতান কসবা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক রেজাউল করিম হত্যায় জড়িত সন্দেহে মঙ্গলবার সাতক্ষীরা কালীগঞ্জের মাছরাঙ্গা গ্রাম থেকে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফরিদকে আটক করেন। আটক ফরিদের দেয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়। বুধবার বিকেলে আটক ফরিদ হোসেনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ওই জাবানবন্দি দিয়েছে ফরিদ।
এ মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামিরা হলো, গাড়িখানা রোডের হাসিব, রেলগেট পাশ্চিমপাড়ার দেলোয়ার হোসেন দেলু, খড়কী এলাকার সাকলাইন, বিল্লাল, রেলগেট এলাকার পিচ্চি রাজা, রানা, রেলগেট এলাকার মনি সাগর, খড়কীর জিসান এবং ঘোপের আরিফ।
খুলনা গেজেট/এমএম