ভুল চিকিৎসায় যশোর আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃষ্টি বেগম (২২) নামে এক প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ করছেন স্বজনরা। অস্ত্রপচারের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যারাতে ওই প্রসূতি মারা গেলে স্বজনরা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
অবশ্য হাসপাতালের উপ-পরিচালক বলেছেন, ‘তারা বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।’
এদিকে, মৃত বৃষ্টিকে বাড়িতে নিয়ে গোসল করানোর সময় মরদেহ হঠাৎ নড়ে ওঠে। তখন সেখানে হুলস্থুল পড়ে যায়। স্বজনরা দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে জরুরি বিভাগের ডাক্তার তাকে দ্বিতীয় দফা মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জানান, ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে আগেই।
মৃত প্রসূতির স্বামী সোহেল রানা জানান, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে বৃষ্টিকে অসুস্থ অবস্থায় আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে নার্সরা তার চিকিৎসা দেন। মঙ্গলবার সকালে গাইনি বিশেষজ্ঞ শিলা পোদ্দার এসে নার্সদের বকা দেন এবং দ্রুত অস্ত্রপচারের তাগিদ দেন। এরপর সকালেই বৃষ্টির সিজার করে সন্তান ভূমিষ্ট করানো হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, বৃষ্টিকে সকালে অপারেশন করা হলেও সন্ধ্যায় জ্ঞান ফেরে। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ে বৃষ্টি। তাকে নার্সরা এসে ইনজেকশন দিয়ে তার বুকে একাধিকবার চাপ দেন। এক পর্যায়ে বৃষ্টির মৃত্যু হয়।
স্বজনরা আরো অভিযোগ করেন, বৃষ্টির মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৭০ হাজার টাকা বিল দাবি করেন। একইসঙ্গে বাচ্চাকে বাঁচাতে আরো ৯০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানায়।
বৃষ্টির মৃত্যু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলাজনিত বলে তার স্বজনরা অভিযোগ তোলেন। তারা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সদের শাস্তি দাবি করে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে কোতয়ালি থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ ব্যাপারে যশোর কোতয়ালী থানার ইনসপেক্টর (তদন্ত) তাসমীম আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’ তিনি বলেন, ‘মৃত গৃহবধূর স্বজনরা লিখিত অভিযোগ দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে, গৃহবধূ বৃষ্টিকে মৃত ঘোষণার প্রায় দুই ঘণ্টা পর ওই নারী ‘বেঁচে আছেন’ বলে খবর মেলে।
শহরের রেলগেট এলাকায় ওই নারীর প্রতিবেশিরা জানান, রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাকে গোসল করানো হচ্ছিল। ওই সময় মরদেহ নড়ে ওঠে। এর ফলে স্বজনদের ধারণা জন্মায়, তিনি বেঁচে আছেন। এ খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্যের। দ্রুত তাকে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু এখানে তাকে জরুরি বিভাগের ডাক্তার আহমেদ তারেক শামস তাকে দ্বিতীয় দফা মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, ওই নারীর আগেই মৃত্যু হয়েছে। তবে ঠিক কত সময় আগে তার মৃত্যু হয়েছে, তা বলেননি ডা. শামস।
খুলনা গেজেট/এনএম