যশোরে কর্মজীবনের প্রথমদিনে বুধবার সকালে চমক দেখালেন নবাগত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম। তিনি গোপনে ছদ্মবেশ ধারণ করে কোতয়ালি থানা, চাঁচড়া ফাঁড়ি ও পুলিশ লাইন্সসহ বিভিন্ন কর্মস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাইসাইকেল চালিয়ে সাধারণ মানুষ সেজে তিনি পুলিশের কাজকর্ম স্বচক্ষে পরিদর্শন করেন।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সুপারের কনফারেন্স কক্ষে যশোরে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এদিন সকাল ৮টায় তিনি সাধারণ মানুষের বেশে বাইসাইকেল চালিয়ে পুলিশের বেশ কয়েকটি কর্মস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি বেশ কিছু অনিয়ম দেখতে পেয়েছেন। আবার অনেক স্থানে পুলিশ রুটিন মাফিক কাজ করছেন বলেও জানান। গোপনে গিয়েছি, ভাল খারাপ দুটোই দেখেছি। আগামীতে সব ঠিক হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বলেন, সমাজ কল্যাণমুখি হলে সবাই সুন্দর হবে। যশোরও সুন্দরভাবে থাকবে। এর জন্য সর্বপ্রথম তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের যে কোন তথ্য যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনেক ক্ষেত্রে অপরাধের তথ্য পুলিশের চেয়ে সাংবাদিকরা আগে পেয়ে থাকেন। তারা সমাজের আয়না। এই আয়না দিয়ে দেখে সমাজের মঙ্গলের জন্য পুলিশ কাজ করবে। ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সাদাকালো দেখা হবে না।
তিনি সাংবাদিকদের মতমত সম্পর্কে বলেন, যশোরে কিশোর গ্যাং এর তৎপরতা রয়েছে। এটা শক্তহাতে দমন করা হবে। এরা সমাজের অন্য কেউ না। আপনার আমার সন্তান বা ভাই। পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ সহযোগিতা করলে এ তৎপরতা রোধ করা সম্ভব। পক্ষে বিপক্ষে মতামত থাকবে। কিন্তু সঠিক কাজটা করে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আমি তদবির করে যশোরে আসেনি। যশোর অনেক গুরুত্বপূর্ণ জেলা। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় অপরাধ প্রবনতা থাকবে। চোরাচালান, চুরি, ছিনতাই-ডাকাতি, মাদক-অস্ত্রের কারবার, মারামারি, গন্ডোগোল রোধ করতে হবে। তিনি বলেন, আমি কাজ করতে চাই। আমাকে নিয়ে কোন টেনশন নেই। আমি আপনাদের সাথে থাকতে চাই। যে কোন প্রকার তথ্য আমাকে দেয়া হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তথ্য দাতার নাম পরিচয় গোপন রাখা হবে।
আমার কাছে যে কোন নাগরিক আসতে পারবে। দরজা সব সময় খোলা থাকবে। সত্য, সুন্দর, ন্যায় ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় আমি সব সময় আছি ও থাকবো।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপনাদের সাথে কথা বলে যশোরের চিত্র অল্প কিছু পেয়েছি। কাজ করার সময় সব চিত্র পেয়ে যাবো। এক সাথে কাজ করলে সমাজের অসংগতি দুর করা সম্ভব।
সভায় আলোচনা করেন, যশোর সংবাদগপত্র পরিষদের সভাপতি একরাম-উদ-দ্দৌলা, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান, দৈনিক গ্রামের কাগজের সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনোতোষ বসু, সাধারণ সম্পাদক এইচ আর তুহিন, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদ, সাংবাদিক ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, নুর ইসলাম, তৌহিদ জামান, সাইফুর রহমান সাইফ, সাকিরুল কবির রিটন, কাজী আশরাফুল আজাদ, মনিরুল ইসলাম, দেওয়ান মোর্শেদ আলম, জুয়েল মৃধা, ইন্দ্রজিৎ রায়, হানিফ ডাকুয়া প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/কেডি