যশোরের বাঘারপাড়ায় রিক্তা খানম নামে ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে নাজমুল হককে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে একলাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। ঘটনার ১৫ মাস পর রোববার যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির এ আদেশ দেন।
ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি নাজমুল হক ওরফে বান্দা আলী বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের ঠাকুরকাঠি গ্রামের নওশের আলীর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি সেতারা খাতুন। ধর্ষণের শিকার নিহত রিক্তা খানম একই গ্রামের মুক্তার হোসেনের মেয়ে। শিশুটি স্থানীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মক্তব ভিত্তিক শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
আদালত সূত্র জানায়, নাজমুল ও রিক্তা পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করত। ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর সকাল থেকে রিক্তাকে খুজে পাচ্ছিল না তার পরিবার। বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে পুকুরে তল্লাশি চালায়। তাদের সাথে নাজমুলও খোঁজাখুজি করতে থাকে। এরইমাঝে নাজমুলকে তার বাড়ির পাশের একটি ফাঁকা স্থানে গর্ত খুড়তে দেখতে পান প্রতিবেশীরা। সেখানে রিক্তার একটি স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে তাদের সন্দেহ হয়। পরে নাজমুলকে জিজ্ঞাসা করলে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
প্রতিবেশীরা তাকে ধরার এক পর্যায় সে স্বীকার করে রিক্তার লাশ তার নিজের ঘরের খাটের নিচে রাখা আছে। নাজমুল আরও জানায়, রিক্তাকে প্রথমে সে ধর্ষণ ও পরে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশ ওই গর্তে পুতে রাখার চেষ্টা করছিলো। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ও একইসাথে নাজমুলকে আটক করে।
এ ঘটনায় রিক্তার বাবা মুক্তার আলী বিশ্বাস বাদী হয়ে বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন। আটকের পর আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যা ও ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় নাজমুল। এরপর থেকে কারাগারে আটক রয়েছেন নাজমুল। মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৭ মে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আওয়াল হোসেন। এ মামলায় ১৬ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার আদালত বাদী ও আসামির উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। পরে আদালত আসামি নাজমুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার বাদীসহ পরিবারের সদস্যরা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাদী মুক্তার আলী বিশ্বাস আসামির দ্রুত ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানান। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। আসামি পক্ষ এ রায়ে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/ এসজেড