যশোরে স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করায় পৃথক দুটি মাদক মামলার দু’আসামির প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। রোববার যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস তাদেরকে এক বছরের জন্য প্রবেশনে মুক্তি দেন। আসামিরা হলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার বেনেয়ালি গ্রামের নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী ও বেনাপোল বড়আঁচড়া গ্রামের ভাড়াটিয়া আয়েশা বেগম ও শার্শা উপজেলার টেংরা গ্রামের আব্দুল কাদের বক্সের ছেলে রহিম বক্স। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট লতিফা ইয়াসমিন ও ভীম সেন দাস।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাত নয়টা ১০ মিনিটে আয়েশা বেগম বেনাপোল পোর্ট থানা এলাকার বড়আঁচড়া গ্রামের ভাড়াটিয়া ঘর থেকে পুলিশের হাতে আটক হন। এসময় তার ঘর থেকে ১৫ বোতল ফেনসিডিল ও ফেনসিডিলের ৪০টি খালি বোতল উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। রোববার আদালত এ মামলায় তাকে সাজা প্রদান করে প্রবেশনে মুক্তি দেন। তার প্রতিবন্ধী সন্তান রয়েছে, সেই সন্তানকে সঠিকভাবে লালন পালন, সাতটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই এবং প্রতিমাসে এলাকার একজন পথশিশুকে আহারসহ নয় শর্তে তাকে এক বছরের জন্য প্রবেশনে মুক্তি দেয়া হয়।
এদিকে, ২০০৮ সালের ৯ আগস্ট দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে যশোর সদর উপজেলার ছোট মেঘলা গ্রাম থেকে ডিবি পুলিশের হাতে ২৪ বোতল ফেনসিডিলসহ রহিম বক্স আটক হন। এ ঘটনায় এএসআই মোমরেজ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। রোববার এ মামলায় তাকে ১১ শর্তে এক বছরের জন্য প্রবেশনে মুক্তি দেন আদালত। তার শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, পিতা-মাতাকে নিয়মিত দেখাশোনা ও ভরণ-পোষণ দিতে হবে। লিগ্যাল এইড সেবা সম্পর্কে এলাকার গরীব মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যুদ্ধাহত একজন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়মিত দেখাশোনা করতে হবে। তিনমাস পরপর স্বেচ্ছায় রক্তদান করবেন ও নিজ বাড়ির আঙিনায় বজ্রপাত নিরোধক তিনটি তাল ও দু’টি নারকেল গাছ লাগাবেন। এসময় প্রবেশন কর্মকর্তা এ.এন.এম সোহরাব হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও দু’আসামির সৎ ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে হবে। কোনো প্রকার অপরাধের সাথে জড়ানো যাবে না। মাদকের সংস্পর্শে যাওয়া যাবে না। দেশত্যাগ করতে পারবে না এবং ট্রাইব্যুনাল কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের তলব করলে যথাসময়ে হাজির হতে হবে। আদেশ অমান্য করলে সাজা ভোগ করতে তারা বাধ্য থাকবে।
খুেলনা গেজেট/এএ