যশোরে পৃথক দুটি মাদক মামলায় দু’জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুটি আদালত দুই আসামির উপস্থিতিতে সাজা প্রদান করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। যশোরের স্পেশাল জজ মোহাম্মদ সামছুল হক ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফাহমিদা জাহাঙ্গীর এ আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বেনাপোলের আমড়াখালী গ্রামের সিদ্দিকের ছেলে নজরুল ইসলাম ও শার্শা উপজেলার বারোপোতা গ্রামের সিরাজ আলীর ছেলে শামীম হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্পেশাল পিপি সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা ও এপিপি খোন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন মুকুল।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ৩১ মে ভোর পাঁচটার দিকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ জানতে পারে সীমান্ত থেকে মাদক নিয়ে একটি প্রাইভেটকার ছুটিপুর হয়ে যশোরের উদ্দেশ্যে আসছে। এরই ভিত্তিতে থানা পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে তারা দত্তপাড়া গ্রামে অবস্থান নেয়। কিছু সময়ের মধ্যে একটি প্রাইভেট কার ওইস্থানে আসে। ওই প্রাইভেটকারটি থামানোর সংকেত দিলে কারটি না থামিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। পুলিশ ওই গাড়ির পিছু নিয়ে নারাঙ্গালী গ্রাম থেকে গাড়িসহ নজরুল ইসলামকে আটক করে। এসময় ওই গাড়িতে থাকা আরও তিনজন দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে তল্লাশি করে গাড়ি পেছনের ডালা থেকে এক হাজার পিছ ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। যার মূল্য তিন লাখ টাকা। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার এসআই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে নজরুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১০ সালের ৩১ আগষ্ট এসআই সাব্বিরুল ইসলাম, নজরুল ও বেনাপোালের দিঘিরপাড় এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে বাবুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। সর্বশেষ সোমবার আদালত এ মামলার রায় ঘোষনা করেন। রায়ে নজরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন এবং একইসাথে অপর আসামি বাবুলকে খালাস প্রদান করেন।
অপর মামলায়, ২০১৭ সালের ২ ডিসেম্বর রাত আটটার দিকে শার্শা থানা পুলিশের কাছে খবর আসে নাভারন-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ভুট্টোর হোটেলে সামনে এক ব্যক্তি হেরোইন নিয়ে সাতক্ষীরাগামি বাসের জন্য অপেক্ষা করছে। পুলিশ তাৎক্ষনিক ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে শামীম নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে। পরে তার হাতে থাকা একটি ব্যাগের ভেতর থেকে ছয়শ’ গ্রাম হোরোইন উদ্ধোর করা হয়। যার দাম ধরা হয় ৬০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় শার্শা থানার এসআই ইমরুল হুসাইন বাদী হয়ে মামলা করেন। ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ এসআই কানু চন্দ্র বিশ্বাস শামীমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। সোমবার এ মামলার রায়ে আদালত শামীমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন।