যশোরের চুড়ামনকাটি বাদিয়াটোলা গ্রামের প্রবাসী মেহের আলী ও নওয়াপাড়ার আড়পাড়া বিলপাড়া গ্রামের মিঠু হত্যায় কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ মামলা দুটির তদন্ত শুরু করলেও এখনো পর্যন্ত কেউ আটক করা হয়নি।
সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে মেহের আলী হত্যার ঘটনায় তার বাবা আব্দুল মালেক বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন। একই রাতে মিঠু হত্যার ঘটনায় তার বাবা পাঁচজনকে আসামি ও অজ্ঞাত আরও ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।
মেহের হত্যা মামলায় বলা হয়েছে, নিহত মেহের বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কুয়েতে চলে যান। চলতি বছরের গত ২৬ জুলাই তিনি দেশে ফেরেন। এরই মাঝে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে তিনি ওই আন্দোলনে মাঠে নামেন। মিছিল মিটিংও করেন। সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মেহের আলী বিজয় মিছিল করেন। গত ৮ আগস্ট তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে পরদিন বাড়ি ফেরেন। এরপর রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে মেহের বাড়ির মেইন গেট আটকাতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এ গুলি তার মাথায় বিদ্ধ হয়। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। মামলায় দাবি করা হয়, মেহের আলীর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে হত্যা করেছে।
এদিকে, আড়পাড়া গ্রামের মিঠু হত্যা মামলার পাঁচ আসামি হলো, আড়পাড়া তরফদার পাড়ার আলী হোসেনের ছেলে সুমন হোসেন, পশ্চিমপাড়ার শফিয়ার রহমানের ছেলে সুজন হোসেন, মুস্তাক তরফদারের ছেলে ইব্রাহিম হোসেন, খোকনের ছেলে বাপ্পি হোসেন ও আড়পাড়া গ্রামের দুখু।
মামলায় বলা হয়েছে, আসামিদের সাথে মিঠুর পূর্ব শক্রতা চলছিলো। গত ৯ আগস্ট রাতে আসামি সুমন, মিঠুকে আড়পাড়া মোড়ের ইমরানের দোকানে মোবাইল ফোন করে ডেকে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে পাশের একটি মাঠে নিয়ে যান। এসময় অন্য আসামিরাও উপস্থিত হয়। এক পর্যায় সুমনের নেতৃত্বে আসামিরা একত্রিত হয়ে মিঠুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে জখম করে। এরপর মিঠুকে গলা কেটে হত্যা করার পর ওই মাঠে ফেলে তারা পালিয়ে যায়। পরদিন পরিবাবেরর লোকজন জানতে পেরে মাঠে পড়ে থাকা মৃতদেহ শনাক্ত করে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দুটি হত্যা মামলা রেকর্ড হয়েছে। অভিযুক্তদের আটকে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। দ্রুত খুনীরা আটক হবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে যশোর সদর উপজেলা এলাকায় দুটি খুনের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। বিষয়টি বিবেচনা করে সোমবার ডিবি পুলিশের একটি টিম ওই দুটি হত্যার স্থল পরিদর্শন করে। ইতিমধ্যে থানা পুলিশও বিষয়টি নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।