খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত
  শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে নিহত ২
চার বছরে হাতিয়ে নিয়েছে পাঁচ কোটি টাকা

যশোর শিক্ষাবোর্ড জালিয়াত চক্রের নিরাপদ আস্তানা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড জালিয়াত চক্রের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে। গত চার বছরে এ চক্রটি শিক্ষাবোর্ডের পাঁচ কোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ এ টাকা হাত বদল হয়েছে।

শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, যশোর শিক্ষাবোর্ড প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখানে আস্তানা গাড়ে প্রতারক চক্র। এ চক্রের সাথে বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগাযোগ ও আর্থিক লেনদেন রয়েছে। তারা ধারাবাহিকভাবে বোর্ডে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। যা কখনো প্রকাশিত হয়, আবার কখনো থাকে অন্তরালে। চলতি মাসে ধরা পড়েছে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের জালিয়াতির চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট থেকে শুরু করে চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জালিয়াত চক্রটি ২৬টি চেকের মাধ্যমে ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭৪২ টাকার বিপরীতে পাঁচ কোটি ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯৮ টাকা উত্তোলন করেছে। যার মাধ্যমে জালিয়াত চক্রের হাতে চলে গেছে চার কোটি ৯৪ লাখ ৬৬ হাজার ১৫৬ টাকা।

শিক্ষাবোর্ডে গত ৭ অক্টোবর প্রথম চেক জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। ৯টি চেকের মাধ্যমে ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও শাহী লাল স্টোর দুই কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাত করে। অভ্যন্তরিন অডিটে বিষয়টি ধরা পড়ায় ১০ অক্টোবর দুদকে অভিযোগ করে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এরপর ২১ অক্টোবর আরও দুই কোটি ৪৩ লাখ সাত হাজার ৮৭৮ টাকা চেক জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। যার মোট পরিমাণ পাঁচ কোটি ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯৮ টাকা।

গত ১৮ অক্টোবর আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল এ মামলাটি করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর মোল্লা আমীর হোসেন, সচিব অধ্যাপক এএমএইচ আলী আর রেজা, হিসাব সহকারী আবদুস সালাম, ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক রাজারহাট এলাকার আবদুল মজিদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বাবু ও শেখহাটি জামরুলতলার শাহীলাল স্টোরের মালিক মৃত সিদ্দিক আলী বিশ্বাসের ছেলে আশরাফুল আলম। মামলা হবার পর ওইদিন রাতেই চেয়ারম্যান ও সচিব তাদের বাংলো থেকে বের হয়ে যান। এরপর থেকে তারা অফিসও করছেন না। তারা অনির্ধারিত ছুটিতে আছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে, জালিয়াত চক্রের অন্যতম বোর্ডের হিসাব সহকারী আবদুস সালাম এ ঘটনা জানাজানি হবার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। ইতিমধ্যে বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। আত্মসাতকৃত টাকার মাধ্যমে আবদুস সালাম ৩২ লাখ টাকা অ্যাকাউন্ট পেইয়ি চেকের মাধ্যমে ফেরত দিয়েছেন। নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক শরিফুল ইসলাম বাবু ও শাহীলাল স্টোরের মালিক আশরাফুল আলমের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিপুল পরিমান এ টাকা উত্তোলন ও হাত বদল হয়েছে। যা নিয়ে গোটা যশোর শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

দুদক যশোর সমন্বিত অফিস সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষাবোর্ডের আড়াই কোটি টাকার চেক জালিয়াতি মামলার সাথে বাকি আড়াই কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনা যুক্ত হবে। এ মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা থেকে নিয়োগ হবে। এরপর তিনি পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!