৬ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত দিবস। উত্তাল একাত্তরের এদিনে প্রথম জেলা হিসেবে শত্রæমুক্ত হয় যশোর। এদিনে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে যশোরে ‘বিজয়ের পথে পথে’ শিরোনামে মুক্তিযোদ্ধাদের আঞ্চলিক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রালয়ের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও উপহার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, যশোরে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বে ছয় ডিসেম্বর বিজয়ের পতাকা ওড়ে। এ খবরে মুক্তিযোদ্ধাদের মনবল চাঙ্গা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যশোরই প্রথম শত্রæমুক্ত জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
সোমবার বেলা তিনটায় শহরের জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের আঞ্চলিক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে আয়োজনের শুভ সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যশোর অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বে পরাজিত হয়ে হাঁটু গেড়ে মাথা নত করে পালিয়ে যায় পাকিস্তানী বাহিনী। তারা চলে গেলেও তাদের প্রেতাত্মারা এখনো দেশ বিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের শেকড় উপড়ে ফেলতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একই ডিজাইনের কবর নির্মাণ করা হচ্ছে। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কবর দেখেই চিনতে পারে, এটা বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর। সেই সঙ্গে সারাদেশের গণকবরগুলো সংরক্ষণ অব্যাহত আছে। এছাড়াও প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধাদের বক্তব্য আর্কাইভের মাধ্যমে কেয়ামত পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। স্মৃতিচারণ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাঁচা মিয়া, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আট নম্বর সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল নাজমুল হুদার স্ত্রী নীল আফরোজ বানু, বীরমুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মনি, মাজহারুল ইসলাম মন্টু, রবিউল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সহসভাপডিত একেএম খয়রাত হোসেন, সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়াদার। সভাপতিত্ব করেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। এ আয়োজনে সাত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মনি, রবিউল আলম, রাজেক আহমেদ, মাজহারুল ইসলাম মন্টু, আফজাল হোসেন দোদুল, শহিদুল ইসলাম মিলন, এককেএম খয়রাত হোসেনকে শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করা হয়। এরআগে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আট নম্বর সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল নাজমুল হুদার নামে যশোরে কারবালা রোডের নতুন নামকরণ করা হয়।
এদিকে, যশোরমুক্ত দিবস উপলক্ষে যশোর শামসুল হুদা স্টেডিয়ামে দুপুর দু’টা থেকে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের ভিডিও প্রদর্শনী, নাটক প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
খুলনা গেজেট/ টি আই