যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মহাজোট প্যানেলের প্রার্থীরা নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। নির্বাচনে ১৩টি পদের নয়টিতে জয়ী হয়েছেন মহাজোট প্রার্থীরা ও জাতীয়তাবাদী ঐক্য ফোরামের প্রার্থী জিতেছে মাত্র চারটি পদে। তবে ঐক্য প্যানেলে থেকে চমক দেখিয়েছে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত ইসলামী লয়ার্স কাউন্সিল। তারা সহসভাপতি পদে দু’জন প্রার্থী দিয়ে দু’জনেই জয়লাভ করেছেন।
নির্বাচনে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন মহাজোটের প্রার্থী শরীফ নুর মো. আলী রেজা। তিনি পেয়েছেন ২শ’ ৬৫ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্য প্যানেলের মোহাম্মদ ইসহক পেয়েছেন ২শ’২৬ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে ব্যাপক ব্যবধানে ফের বিজয়ী হয়েছেন মহজোট সমর্থিত শাহানুর আলম শাহীন। তিনি পেয়েছেন ৩শ’৭৯ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সমর্থিত নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী চুন্নু পেয়েছেন মাত্র ১শ’৭ ভোট।
ফলাফলে সহসভাপতি পদে ফোরামের আব্দুল লতিফ ২শ’৫৬ ও মনজুর কাদির আশিক ২শ’২৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এপদে মহাজোটের জিএম আবু মুছা ২শ’২ ও সোহরাব হোসেন ১শ’৭৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদে মহাজোটের পলক কুমার মৈত্র পেয়েছেন ২শ’ ৪৩ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আব্দুল লতিফ লতা পেয়েছেন ২শ’২০ ভোট।
সহকারী সম্পাদক দুটি পদে একজন মহাজোটের অপরজন ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। ঐক্য ফোরামের জুলফিকার আলী জুলু ৩শ’১ ভোট ও মহাজোটের বশির আহম্মেদ খান ২শ’ ৪০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ২শ’১০ ও রেহেনা পারভীন ১শ’২৯ ভোট পেয়েছেন। গ্রন্থগার সম্পাদক পদে আবারো ৩শ’ ৩২ ভোট পেয়ে এসএম নাসির আলম জয়ী হয়েছেন। পরাজিত প্রার্থী ঐক্য প্যানেলের মকবুল হোসেন পেয়েছেন ১শ’২৪ ভোট।
এছাড়া সদস্য পদে মহাজোটের চারজনের মধ্যে তারিক এনাম অনিক ২শ’ ৬২, উদয়ন বিশ্বাস ২শ’ ৫১, রেজাউর রহমান ২শ’ ৪২ ও আরিফ শাহরিয়ার ২শ’ ২২ ভোট ও ঐক্য ফোরামের সেলিম রেজা ২শ’ ৫৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এছাড়া মহাজোটের নুর ইসলাম নুরুল ১শ’৯৮, ঐক্য ফোরামের সাবিহা সুলতানা ১শ’৭৪, রাজিব হোসেন ১শ’৬০, মাহমুদা খানম ১শ’৪৩ ও আবুল ফয়েজ ৯২ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
সন্ধ্যায় ভোট গণনা শেষে রাত ১০টায় নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ইসমত হাসার এ ফলাফল ঘোষণা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য শামসুর রহমান, শহিদুর রহমান, শাহরিয়ার বাবুসহ আইনজীবীরা।
আইনজীবীরা বলেছেন, মহাজোটের প্রার্থীরা একাট্টা হয়ে কাজ করে তরুণদের কাছে টানতে সক্ষম হওয়ায় তাদের এ সাফল্য বলে মন্তব্য করেছেন সাধারণ সদস্যরা। অপরদিকে, বিএনপি এ পরাজয়ের পেছনে প্রার্থী বাছাইয়ে অসঙ্গতি ও ফোরামের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে দায়ী করেছেন।
নির্বাচনকে ঘিরে শুক্রবার সকাল থেকেই আদালতপাড়ায় উৎসবমূখর পরিবেশেন সৃষ্টি হয়। কেবল আইনজীবীরা নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা সেখানে ভিড় করেন। এদিন সকাল ১০ থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। এক ঘণ্টা নামাজের বিরতির পর ফের শুরু হয়ে বিকেল চারটায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। মোট পাঁচশ’৯ জন ভোটারের মধ্যে চারশ’ ৯৪ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই