বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিদ্যুতায়িত হয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৮ জুলাই) সকালে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের পূর্বজয়পুর গ্রামে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এই মৃত্যুকে পল্লী বিদ্যুতের গাফেলতি হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। তবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে, বৃষ্টিতে সুপারি গাছ পরে তার ছিড়ে যাওয়ায় এই দূর্ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। নিহত দম্পতি বীরেন মন্ডল ও তার স্ত্রী রীতা রানী মন্ডল।
নিহত বীরেন মন্ডল জয়পুর গ্রামের মৃত পূন্য চন্দ্র মন্ডলের ছেলে। রীতা রানী মন্ডল বীরেন মন্ডলের স্ত্রী। তাদের দুটি ছেলে রয়েছে। এক ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং আরেক ছেলে বাগেরহাট রামকৃষ্ণ আশ্রমে থেকে পিসি কলেজে পড়াশুনা করেন। ঘটনার সময় ছেলেরা বাড়িতে ছিলেন না।
স্থানীয় অনিতা হালদার বলেন, বীরেন মন্ডলের ঘরের উপর থেকে পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন গেছে। সকালে গাছের ডাল পরে বৈদ্যুতিক তারে আগুন ধরে যায়। এক পর্যায়ে একটি তার বীরেন মন্ডলের ঘরের সামনে পরে। ওই তার সরাতে গিয়ে বীরেন মন্ডল বিদ্যুতায়িত হয় এবং তার স্ত্রী রীতা রানী মন্ডল নিজ ঘরের মেইন সুইচ বন্ধ করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
অনিতা আরও বলেন, পল্লী বিদ্যুতের গাফেলতীতেই এই দুটি প্রাণ গেল। তারা যদি পাইপ দিয়ে বিদ্যুতের তার ঘরের উপর থেকে নিত, তাইলে এই মৃত্যু হত না।
নিহতের ছেলে চঞ্চল মন্ডল বলেন, আগুন ধরে একটা তার ছিড়ে নিচে পড়ে গেছে, তারপরও ট্রান্সফর্মার থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়নি। তাহলে ট্রান্সফরমারে কাটআউট কেন লাগাবে, এটাতো মানুষের জীবন বাঁচাতে লাগানো হয়। আমার বাবা পল্লী বিদ্যুতের গাফেলতিতেই মারা গেছে।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহা ব্যবস্থাপক (জিএম) সুশান্ত রায় বলেন, সঞ্চালন লাইনের খুব কাছেই বীরেন মন্ডলের একটি সুপারি গাছ ছিল। গাছটি তারের উপর পরার ঝুকিতে ছিল, যার কারণে আমাদের কর্মীরা ওই গাছটি কেটে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু বীরেন মন্ডল ওই গাছ কাটতে না দিয়ে রশী দিয়ে বেঁধে রাখেন। শনিবার সকালে বৃষ্টি ও বাতাসে রশী ছিড়ে সেুপারি গাছ বাঁধা রশীটি ছিড়ে যায়। এতে গাছটি তারের উপর পরে এবং তার ছিড়ে মাটিতে পরে যায়। ওই তার ওঠাতে গিয়েই বীরেন মন্ডল বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। বীরেনকে বাঁচাতে গিয়ে তার স্ত্রী মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় চিতলমারি জোনাল অফিসের উপ-মহা ব্যবস্থাপক মোঃ শহিদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘটনা করা হয়েছে। এই কমিটিকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে দন্ত রিপোর্ট দিবে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মূল ঘটনা জানা যাবে।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ না থাকায় মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়নি।
খুলনা গেজেট/এসজেড