খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাস-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুইজন নিহত
  মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭
  সাবেক প্রধান বিচারপতির মৃত্যুতে আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ বন্ধ

মোড়লগঞ্জে ৭৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলা বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন

মোড়লগঞ্জ প্রতিনিধি

সারা দেশের সনাতন ধর্মালম্বীরা যখন দেবী দূর্গাকে বরণ করতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই হাতে হাত ধরে মহাসড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ উপজেলার বলভাদ্রপুর গ্রামবাসী। বলভাদ্রপুর সার্বজনীন পূজা মন্দিরে দূর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত ৭৯ বছরের পুরোনো মেলা বন্ধের প্রতিবাদে শনিবার (০১ অক্টোবর) দুপুরে রাস্তায় নামেন তারা। পূজা মন্দিরের সামনে বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপি অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহন করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, বলভাদ্রপুর সার্বজনীন পূজা মন্দিরে দূর্গাপূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক কমলেশ দাস, পূজা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুধাংশ কুমার দাস খোকন, স্থানীয় অনুপকুন্ডু, সাথী দাস, বিথিকা দাস, রিতা রানী দাস, মৌ দাসপ্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ১৯৪৩ সালে বলভাদ্রপুর সার্বজনীন পূজা মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে এই মন্দিরে দূর্গাপূজার সাথে মেলা হয়ে থাকে। করোনাকালীন সময়েও এখানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারও পূজার সাথে মেলার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে মোড়লগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম মন্দিরে এসে মেলা না করার নির্দেশ দেন। মন্দির কমিটি ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মেলা চালুর অনুমতির জন্য অনুরোধ করলেও, মন গলেনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার । মেলা বন্ধ হওয়ায় এলাকার বৃদ্ধ থেকে বাচ্চা সকলেরই মন ক্ষুব্ধ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সুধাংশ কুমার দাস খোকন বলেন, বাগেরহাট শহরে মাসব্যাপি মেলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে মেলা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা শুধু আমাদের মেলা নিয়ে। যেকোন মূল্যে এখানে মেলা করার অনুমতি দিতে হবে। না হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাব।

দূর্গাপূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক কমলেশ দাস বলেন, অজানা কারণে মাত্র একদিন আগে মেলা বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা খুবই হতাশ।মেলায় কিছু খাবার ও কসমেটিক্সের দোকান থাকে। অন্যকিছু তো থাকে না, তাইলে কেন মেলা বন্ধ করে দেওয়া হল।

এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মেলা উপলক্ষে আগত ব্যবসায়ী ও জুয়ার আসর থেকে বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিপন কুমার দাস মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেছেন। এই টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মেলার জায়গার মালিক সোমনাথ দে‘র সাথে দ্বন্দের জেরে এই মেলা বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া চেয়ারম্যানের একচ্ছত্র আধিপত্তের কারণে সোমনাথ দে ও চেয়ারম্যানের লোকজনের মধ্যে অন্তকোন্দল চলছে এলাকায়।

বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিপন কুমার দাস বলেন, একটি পক্ষ জুয়ার কোট বসাতে চেয়েছিল। স্থানীয় চেয়ারম্যান হিসেবে জুয়ার কোট বসাতে না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মেলার টাকা মন্দির কমিটি নিয়েছে, আমি মেলার কোন টাকা নেইনি।

জমির মালিক সোমনাথ দে বলেন, মেলা বন্ধের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। অনুমতি না থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জুয়ার কোট ও আর্থিক বিষয়ে আমার কোন ধারণা নেই।

মোড়লগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরোজমিন পরিদর্শন এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে অনুমতি ছাড়া মেলা আয়োজনসহ বেশকিছু অসঙ্গিত পাওয়া যায়। যার কারণে মেলা করতে নিষেধ করা হয়েছে। পূজা ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান যথারীতি চলবে।

খুলনা গেজেট/এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!