আফগানিস্তানের নতুন সরকার গঠনের তারিখ একদিন পেছানো হয়েছে। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) তালেবানের নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণার কথা থাকলেও তা পেছানো হয়েছে বলে তালেবানের মুখপাত্র জাহিবুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করা হবে।
এদিকে, মন্ত্রিসভায় ৮০ ভাগ আসনেই তালেবানের দোহা টিমের সদস্যরা থাকবেন বলে সংগঠনটির সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে এক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা বারাদার আফগানিস্তানের নতুন সরকারের নেতৃত্ব দেবেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যম টোলো নিউজ তালেবানের একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
মন্ত্রিসভায় বারাদারের সঙ্গে তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব এবং শের মোহাম্মদ আব্বাস স্ট্যানিকজাইও থাকবেন।
যদিও হামিদ কারজাই কিংবা আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ তালেবানের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন না বলে ওই সূত্র জানিয়েছে। তবে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই না পেলেও তারা উপদেষ্টা হিসেবে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এছাড়া মন্ত্রিসভায় হাক্কানি নেটওয়ার্কের সদস্যরা পদ পাবেন বলে জানা গেছে। আফগানিস্তানের আলোচিত যুদ্ধবাজ নেতা হিজব-ই-ইসলামি দলের প্রধান গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার মন্ত্রিসভায় পদ না পেলেও পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন বলে জানা গেছে।
পাঞ্জশিরে সংঘর্ষ, যা বললেন হামিদ কারজাই
আফগানিস্তানের পাঞ্জশির প্রদেশে তালেবান ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ বন্ধে আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। তার মতে, তাদের (তালেবান ও প্রতিরোধ বাহিনী) অস্ত্র রেখে শান্তিপূর্ণ আলোচনায় যুক্ত হওয়া দরকার। খবর-বিবিসির।
প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এক টুইটে বলেন, পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পাঞ্জশিরে সামরিক অভিযান ও যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এর পরিণাম আমি দেশ ও জনগণের স্বার্থে বিবেচনা করি না। আমি এই কারণে উভয় পক্ষকে আহ্বান জানাই, যুদ্ধ একমাত্র সমাধানের পথ হতে পারে না। তবে এতে হতাহত ও ভুক্তভোগী হচ্ছে আফগানিস্তান।
এদিকে পাঞ্জশিরে তালেবান বিরোধী বলছে, শুক্রবার তালেবানের বিপুল সেনা হতাহতের শিকার হয়েছে। দেশটিতে এটি একমাত্র প্রদেশ যা তালেবানের নিয়ন্ত্রণে নেই।
তালেবানের কাছে যে আশা পুতিনের
আফগানিস্তানে নতুন সরকার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে তালেবান। সরকার ঘোষণার আগেই এক বক্তব্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আফগানিস্তানে তালেবানের ব্যবহার সুশীল হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন। তার মতে, আফগানিস্তানে তালেবানের ব্যবহার সুশীল হবে যাতে বিশ্ব সম্প্রদায় তালেবানের সঙ্গে কূটনীতিক যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে। শুক্রবার রাশিয়ার পূর্ব শহর ভ্লাদিভসটকে ইস্টান ইকোনোমিক ফোরামে এক ভাষণে এ কথা বলেন।
পুতিন বলেন, আফগানিস্তানের ভাঙনে রাশিয়ার কোনো স্বার্থ নেই। যদি এটি ঘটে, তাহলে কথা বলার কেউ থাকবে না।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, তালেবানকে অতিদ্রুত সভ্য মানুষের পরিবারে প্রবেশ করতে হবে, তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা সহজ হবে।
তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি নয়, তবে যোগাযোগ থাকবে : যুক্তরাজ্য
আফগানিস্তানে তালেবানের সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না যুক্তরাজ্য। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আফগানিস্তানের নতুন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাব। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়।
পাকিস্তান সফররত যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার বলেন, যুক্তরাজ্য তালেবানকে নতুন সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না। তবে নতুন বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। আফগানিস্তানের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ুক, সেটা আমরা চাই না।
ডোমিনিক রাব বলেন, তালেবানের সহযোগিতা না থাকলে আমরা কাবুল থেকে ১৫ হাজার মানুষকে ফিরিয়ে আনতে পারতাম না। সরাসরি এক ধরনের যোগাযোগ এবং তাদের সঙ্গে কোনোভাবে সংযোগ রক্ষার গুরুত্ব রয়েছে বলে আমরা মনে করি।
খুলনা গেজেট/কেএম