বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে শ্বাশুড়ি ও দেবরের নির্যাতন মারপিটে আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন গৃহবধূ শারমিন আক্তার (২৪)। ঘটনাটি ঘটেছে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামে। শ্বাশুড়ি দেবর পলাতক।
রবিবার আহত শারমিন আক্তার জানান, ৮ বছর বিবাহ হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৮ বার শারীরিক নির্যাতন মারপিটের শিকার হয়েছি। হাসপাতাল থেকে ১০ দিন পূর্বে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে গিয়েছি। শনিবার বিকেলে শ্বাশুড়ি হাসিনা বেগম, দেবর আরমান তালুকদার মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল ভেঙ্গে দিয়েছে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, স্বামী দিনমজুর মো. সাইফুল তালুকদারকে বিবাহের পর থেকেই বিভিন্ন সময় পিতার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে ইজিবাইকসহ নগদ টাকা, গরু ছাগল মালামাল স্বামীর ভালবাসা সংসারে একটু সুখের জন্য এনে দিয়েছি বিভিন্ন সময়। সবগুলো বিক্রি করে খেয়েছে। এখন পিতার বাড়ি থেকে ১০ কাটা জমি লিখে দিতে চাপ দিচ্ছে। এতে রাজি না হওয়ায় শ্বাশুড়ি দেবরের নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছি।
ওই গৃহবধূর ৫ বছরের একটি মেয়ে সামিয়া ও আড়াই বছরের একটি ছেলে সানি রয়েছে।
গৃহবধূর পিতা মিজানুর রহমান মৃধা বলেন, কয়দিন পর পরই এভাবে মেয়েটাকে মারপিট করে। স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ১০ দিন পূর্বে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়েছিলো। মটারের পাইক থেকে মারপিট করে গুরুত্বর জখম করেছে। এখন আবারও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আহত শারমিন আক্তারকে পরিষদে নিয়ে এসেছিলো লোকজন। তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার স্বামীর বাড়িতে চৌকিদার পাঠিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছিলো। তারা সকলে পালিয়ে গেছে। বিষয়টি দায়িত্বরত বিট পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
এ সম্পর্কে হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. গোলাম রাফি বলেন, চিকিৎসাধীন শারমিন আক্তারের শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহৃ ও কালো কয়েকটি দাগ রয়েছে। আঙ্গুল ভেঙ্গে গেছে কিনা এক্সরে রিপোর্ট পেলে বলা যাবে। তবে আঙ্গুল ফুলা রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম