বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৯নং ভাটখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা বিভাগের কোন অনুমতি ছাড়াই প্রধান শিক্ষক নিজের ক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির সহায়তায় এ গাছ কেটে তা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সরকারি ছুটির দিন থাকায় সকালে উক্ত প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. এমদাদুল হকের উপস্থিতিতে গাছ কেটে তা বিক্রয় করতে দেখেন এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, ১৯ নং ভাটখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু চাম্বল, তাল, মেহগনী ও নারকেল গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির লক্ষাধিক টাকা মূল্যের প্রায় ৯/১০টি গাছ কাটান স্কুলের প্রধান শিক্ষক। গাছ কাটার সাথে সাথে কিছু গাছ বিক্রিও করে দেন। উপজেলা প্রসাশনের অনুমতি ছাড়া সরকারি সম্পদ এভাবে কেউ কাটতে ও বিক্রি করতে পারে না। যারা সরকারি সম্পদ আত্মসাত ও বিক্রির সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মানের জন্য সিমানার ওপরে যে গাছ গুলো রয়েছে তা কাটা হয়েছে। অনুমতি নেওয়ার বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভালো বলতে পারবেন বলে তিনি এড়িয়ে যান। শিক্ষাবিভাগ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নেয়া হয়েছে বলে দাবি করলেও কোন অনুমতির কাগজ দেখাতে পারেননি প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান ।
সংশ্লীষ্ট ক্লাষ্টারে দায়িত্বরত উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ের গাছ কেটে বিক্রয় করছে বলে আমার জানা নেই। গাছ কাটার কথা শুনতে পেরেই আমি প্রধান শিক্ষককে মোবাইল ফোন করে গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দিন জানান, গত রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিরুজ্জামানকে সরেজমিনে দেখার জন্য পাঠিয়েছি। জায়গা মেপে সিমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছি। যদি স্কুলের গাছ কেটে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তদন্ত পর্ম্পকে জানতে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামানকে বার বার ফোনে কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হলে অবশ্যই অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু ১৯নং ভাটখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের গাছ কাটতে কোনো অনুমতি নেননি। অনুমতি না নিয়ে গাছ কাটার উদ্যোগ নিলে প্রধান শিক্ষক আইন ভঙ্গ করেছেন।
তবে রোববার (২১ আগস্ট) প্রধান শিক্ষক স্কুলের দুইটি গাছ কাটার জন্য অনুমতি চেয়েছেন। এসময় প্রধান শিক্ষক বলেছে যে গাছ গুলি কাটা হয়েছে তা ব্যাক্তি মালিকানা। ইতোমধ্য শিক্ষা অফিসারকে বলেছি, কেন অনুমতি ছাড়া গাছ কর্তন করেছে, এ কারনে প্রধান শিক্ষককে শো-কজ করার জন্য এবং এ বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/এমএনএস