বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দুই প্রতিবন্ধী পরিবার পেলো মাথা গোঁজার ঠাই। বসতঘর পেয়ে খুশি তারা। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তারা দোয়া করলেন ।
সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বিশারাঘাটা গ্রামে শারিরীক প্রতিবন্ধী আঃ রব মৃধা। অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক এবি এম মোসলেম আলী মৃধার ৬ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় ছেলে রব। জন্ম থেকেই তার দু’ পা, ও দু’ হাত শারিরীকভাবে অচল। শারিরীক প্রতিবন্ধীর মধ্যে থেকেও সে ৯ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন।
অভাবের তাড়নায় খুলনা শহরের নিরালা এলাকায় চা বিক্রি করে কোন রকমের দিন পার করতেন। সেখান থেকে নিজ উপার্যনের কিছু টাকা দিয়ে পিতাকে ১৪ শতক জমি কিনে দিয়েছেন বিশারীঘাটা গ্রামের বাড়িতে। কয়েক বছর পর শহর থেকে ফিরে আসেন নিজ গ্রামে। অন্যের বাড়িতে তার জীবনযাপন।
সংসার জীবনে প্রতিবন্ধী স্বামীকে বোঝা মনে করে ৬ বছরের মেয়েকে রেখে স্ত্রী চলে যান পিতার বাড়িতে। জীবন যুদ্ধেও তার পরেও থেমে নেই আব্দুর রব মৃধা। অভাবের সংসারে মেয়ে রাবেয়াকে লেখাপড়া শিখিয়ে বর্তমানে সে এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
সরকারিভাবে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে দুস্থ ভিটেমাটিহীন প্রকল্পের মাধ্যমে এ উপজেলা সদর ইউনিয়নের ১ টি ও রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে ২টি ঘর বরাদ্দ পেয়েছে প্রতিবন্ধী দুটি পরিবার। এ সুবিধাভোগীর আওতায় মাথা গোজার ঠাই হলো দুই শারিরীক প্রতিবন্ধী আঃ রব মৃধা ও রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের আব্দুল কুদ্দুস। রঙ্গিন টিনের ছাউনি দুটি কক্ষ, টয়লেট ও রান্না ঘরসহ সেমিপাকা এ ঘরের ব্যায় হয়েছে একটিতে ঘরে ২ লাখ ৪০ হাজার অন্যটি ২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
নতুন ঘর পেয়ে খুশির আনন্দে অশ্রু নয়নে প্রতিবন্ধী আঃ রব মৃধা বলেন, মাথা গোজার ঠাই করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার জন্য দোয়া করি। গৃহের ছাউনির কাঠ, ইট বালু কেরিং সহ প্রায় ৫০/৫৫ হাজার টাকা নিজ খরচে ব্যায় হয়েছে। তবে, দুঃখ একটাই কাজের তদারকী অফিসের লোক আজিজুল শেখ চোখ রাঙ্গিয়ে কাজটি দায়সারভাবে করেছে। আমার ঘরের প্রায় দেড় হাজার ইট বিক্রি করেছে পাশেই। আমাকে মারধরের হুমকিও সে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে আজিজুল শেখ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে ঘর তুলছি। প্রতিবন্ধীর কথা শোনা যাবে না। ওর কোন কথা সঠিক নয়।
এ সর্ম্পকে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে এ উপজেলায় দুটি ইউনিয়নে দুইটি প্রতিবন্ধী পরিবার তার দপ্তরের মাধ্যমে সুবিধার আওতায় এসেছে। যা ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। কাজটি তদারকি করছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
খুলনা গেজেট/ এসজেড