বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে তীব্র দাবদাহে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, হিটষ্টোক ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা। ল্যাম্পিন স্কিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গোসম্পদ। ২০ ভাগ বোরো ফসলী ধানের ক্ষতির আশংকায় কৃষক। শ্রমজীবি কর্মজীবি মানুষেরা বাড়ির বাহিরে বের হতে না পেরে কর্মহীন হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে প্রতিনিয়ত লোডশেড়িং ৫/৬ ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন কাটাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত এক সপ্তাহ ধরে বাগেরহাট জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছড়িয়ে পড়ায় অতিরিক্ত গরমে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অর্ধশতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগী সংখ্যা বেশী। অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
১৮ এপ্রিল জেসমিন আনোয়ার (৪৩) নামের একজন হিটষ্টোক রোগী ভর্তি হলেও পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ডায়রিয়া রোগী ওমর ফারুক (২), মৌ আক্তার (২৫), হাফিজুল (১৮ মাস), নারগিস সুলতানা (৪০), রং বালা (৪১), মঞ্জু বেগম (৩৫), সোহেল হাওলাদার (৩০), শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত নুরুল ইসলাম খান (৬৫), সাইফুল শেখ (২২)। এ ছাড়াও নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগী ইয়াসমিন আক্তার (৫), ইয়ামিন (২), বয়স্ক বকুল বেগম (৭০) বৃহস্পতিবার হাসপাতালে এসব আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসাধীন রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রায়হান ফেরদৌসী দোলা বলেন, প্রচন্ড গরমে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক ১৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে সার্বক্ষনিক একজন ডাক্তার রয়েছে।
এদিকে উপজেলা প্রাণীসম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা ডা. মো. ইউনুছ আলী বলেন, প্রচন্ড দাবদাহে এ উপজেলায় গবাদীপশু গো-সম্পদ ল্যাম্পিন স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। দৈবজ্ঞহাটী, রামচন্দ্রপুর, হোগলাপাশা, বইলবুনিয়া ইউনিয়নে বেশী প্রভাব পড়েছে। ইতোমধ্যে ১৩০টি গরু আক্রান্ত হয়েছে। এদের চিকিৎসা ও করনীয় বিষয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ রোগের বিষয়ে প্রাণী বিজ্ঞানী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এলএসডি একধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। এটি গরুর একধরনের চর্মরোগ।
তীব্র দাবদাহে কৃষি বিভাগের ক্ষতির আংশকায় ২০ ভাগ বোরো ধান ও চলতি মৌসুমে ফলফলাদি ঝড়ে পড়ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী এ বিষয়ে বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ৯ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছে কৃষক। এখনও যে সব ফসলী মাঠে ধান পাকেনি। সে ফসল অতিরিক্ত দাবদাহে পুড়ে গিয়ে ২০ ভাগ ধান চিটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলফলাদি ঝড়ে পড়ছে। সে ক্ষেত্রে পানি দিয়ে অতিরিক্ত সেচ ব্যবস্থা রাখা হলে ক্ষতির পরিমান কিছুটা হলেও কমবে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড