বাগেরহাটের মোংলায় প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের কাঁকড়া লুটের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ঘুরে প্রতিকার না পেয়ে শনিবার (২৯ জুলাই) রাতে মোংলা থানায় মামলা দায়ের করেছেন ব্যবসায়ী ইসমাইল গাজী। এর আগে গেল ২২জুলাই গভীর রাতে মোংলার পশুর নদী সংলগ্ন ঘষিয়াখালী চ্যানেলে প্রবেশেদ্বারে কার্গোবোট থেকে ৪ হাজার ২৫৬কেজি কাঁকড়া লুটে নেয় সন্ত্রাসীরা। আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুউদ্দীন।
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী ইসমাইল গাজী মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের উলুবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত ইজাহার গাজীর ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাকড়া‘র ব্যবসা করেন।
ইসমাইল গাজী বলেন, আমার চোট ভাই ওসমান গাজী সিন্দুরতলা খাল থেকে জেলেদের আহরিত কাকড়া নিয়ে একটি কার্গোবোটে করে শুক্রবার (২২ জুলাই) গভীর রাতে উলুবুনিয়া এলাকায় থাকা আমাদের ডিপুতে আসছিলেন। রাত সাড়ে তিনটার দিকে পশুর নদী সংলগ্ন ঘষিয়াখালী চ্যানেলে প্রবেশেদ্বারে পৌছালে রামপাল উপজেলার পেড়িখালী এলাকার হাসিব ইজারাদার ও মোংলার সোনাইলতলা এলাকার রেজাউল সরদারসহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী কার্গোবোটটিতে উঠে আমার ভাইসহ জেলেদের মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা বোটের ১৪০ টি ক্যারটে থাকা ৪ হাজার ২৫৬কেজি কাঁকড়া লুটে নেয়। যার দাম ২৯লাখ ৭৯হাজার ২শ টাকা।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে লুটে নেওয়া কাকড়া একটি বোটে করে খুলনার দাকোপ উপজেলার বাজুয়া এলাকায় বিদ্যারবাহন খেয়াঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ট্রাকে করে রামপালের ভাগা বাজারে আনা হয়। সেখানে প্রোসেসিং করে কাকড়াগুলোকে ঢাকায় চালান করে দেন লুটকারীরা।
ব্যবসায়ী ইসমাইল গাজী বলেন, এক সপ্তাহ ধরে পুলিশসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি। কিন্তু আমার মামলা নেয়নি। পরে শনিবার রাতে মামলা নিয়েছে। আসামীরা অনেক প্রভাবশালী তাই হয়ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করছে না। আসামীদের গ্রেপ্তার করে কাকড়ার টাকা আদায় করে দেওয়ার জন্য পুলিশের উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এই ব্যবসায়ী।
১ জুন থেকে ৩১আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে মাছ-কাকড়া আহরণ বন্ধ থাকার পরেও জেলেরা কাকড়া কোথায় পেল এমন প্রশ্নে ব্যবসায়ী ইসমাইল গাজী বলেন, সুন্দরবন থেকে এসব কাকড়া আহরণ করা হয়নি। জয়মনিসহ স্থানীয় বিভিন্ন খাল ও নদী থেকে জেলেরা এই কাকড়া আহরণ করেছে।
এদিকে মামলা হওয়ার পরপরই গা ঢাকা দিয়েছেন আসামী হাসিব ইজারাদার ও রেজাউল সরদার। তাদের মুঠোফোন নাম্বারও বন্ধ রয়েছে।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুউদ্দীন বলেন, কাকড়া লুটের ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
এক সপ্তাহ পরে মামলা দায়ের হওয়ার কারণ সম্পর্কে ওসি মোহাম্মদ সামসুউদ্দীন বলেন, ওই ব্যবসায়ী শুক্রবার (২৮ জুলাই) একটি ত্রুটিযুক্ত এজাহার নিয়ে এসেছিল। পরে এজাহার সংশোধন করে আনলে, আমরা মামলা নথিভুক্ত করেছি।
খুলনা গজেটে/ বিএম শহিদ