নৌ-শ্রমিকদের খাদ্য ভাতা, নদীতে নিরাপত্তা ও পরিচয় পত্রসহ বাংলাদেশ লাইটার ও নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ১৫ এবং ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো মোংলা বন্দরেও নৌযান শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন অব্যাহত রয়েছে। তৃতীয় দিনের মতো চলছে শ্রমিকদের নৌ-পথে কর্মবিরতি, কিন্ত মালিক পক্ষ শ্রমিকদের দাবি অ-যৌক্তিক বলে মানতে নারাজ তারা।
পুর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ২০ অক্টোবর রাত ১২টা ১মিনিট থেকে দেশব্যাপি কর্মবিরতির ডাক দেয় বাংরাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশন ও লাইটার শ্রমিক ইউনিয়ন। এ দাবির ব্যাপারে নৌযান মালিকদের পুর্বে থেকেই জানানো হয়েছে তারা ২০ অক্টোবর থেকে কর্মবিরতি পালন করবে। গত বছর দু’দফায় এসকল দাবি নিয়ে কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন আন্দোলন করেছিল শ্রমিকরা কিন্ত শ্রমিকদের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ, সরকার ও মালিক পক্ষ ত্রি-পক্ষিয় বৈঠক হয়ে সেখানে ৪৫ দিনের মধ্যে তাদের এ দাবির মধ্য থেকে গুরুত্বপুর্ন কিছু দাবি অচিরেই মেনে নেবে বলে একটি সমোঝোতা চুক্তি করে মালিক পক্ষ বলে মোংলা আঞ্চলিক শাখার নেতৃবৃন্দ দাবি করেছে। মালিকদের দেয়া ৪৫ দিনের প্রতিশ্রুতি প্রায় বছর পেরিয়ে গেলেও এ ব্যাপারে কোন কর্ণপাত নেই নৌযান মালিকদের।
তিন দিনের চলমান আন্দোলনে এখন পর্যন্ত সরকার বা মালিক পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসের কোন বানী এখনও আসেনি বলে জানায় মোংলা লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মাইনুল হোসেন মিন্টু। তাই ন্যায্য ১৫ এবং ১১ দফা দাবিতে অনড় রয়েছে নৌ-যান শ্রমিকরা। সারা দেশে প্রায় ৩ লক্ষ নৌ-শ্রমিক তাদের যার যার অবস্থানে থেকে কর্মবিরতী পালন করছে। যার ফলে এ মুহুর্তে মোংলা বন্দর চ্যানেলের পশুর নদীতে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪শ’ লাইটারেজ জাহাজ অবস্থান করে কর্মবিরতি পালন করছে।
এদিকে, মোংলা সমুদ্র বন্দরে বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ বহিঃনঙ্গর ও হারবাড়িয়ায় ১০ টি বাণিজ্যিক জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় অবস্থান করছে। কর্মবিরতির কারণে বন্দরের সকল জাহাজে পণ্য খালাস-বোঝাই বন্ধ রয়েছে। মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে আজ দুপুরের পর ২টি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করবে এবং পন্য বোঝাই ৩টি নতুন বিদেশি জাহাজর বন্দরে আগমনের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দর কতৃৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল এম শাহাজাহান জানান, সারা দেশেই নৌ-বন্দর গুলোতে শ্রমিকদের কর্মবিরতি তারা অব্যাহত রেখেছে। তবে শ্রমিকরা বলছে তাদের ১৫ ও ১১ দফা দাবি যৌক্তিক আর মালিক পক্ষ বলছে অ-যৌক্তিক। তাদের দাবির মুখে দেশের নৌ-বন্দরগুলো সাময়িক সমস্যায় পরতে হচ্ছে। বন্দরের বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য খালাস করতে না পারলে বন্দর ব্যবহারকারীসহ আমদানিকারকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হবে। তবে শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি উভয় পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা প্রয়োজন বলে জানায় বন্দর চেয়ারম্যান।
খুলনা গেজেট/এনএম