মোংলায় কঠোর লকডাউনের আজ ১০ তম দিন। এদিকে এলাকায় বেড়েই চলেছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের হার। সেই সাথে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা তেমন না থাকায় পরীক্ষার পর অনেক করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে নিজ বাসায়ই নিচ্ছে ব্যক্তিগত চিকিৎসা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, এই মুহুর্তে এখানে বেশ কয়েকটি আইসিইউ বেড ও সেন্টালসহ পর্যাপ্ত অক্সিজেন প্রয়োজন। তবে যা আছে তা দিয়েই চলছে কার্যক্রম।
বন্দর সংলগ্ন মোংলা উপজেলায় করোনার মহামারীকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন অক্সিজেন, আইসিইউ বেড ও অন্য জেলা থেকে আসা লোকজনকে শহরে ঢোকা থেকে বিরত রাখা। কিন্ত পুলিশ প্রশাসন মানুষদের শহরে প্রবেশ ঠেকাতে পারছে না। লোকজন বিভিন্ন অজুহাতে ঢুকে পরছে পৌর শহরে। এছাড়াও মোংলা হাসপাতালে ল্যাব টেকনিশিয়ানসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে লোকবল না থাকায় বিপদে পরতে হচ্ছে এলাকা থেকে আসা রুগীদের। নেই এক্স-রে করানো কোন ব্যবস্থা। করোনা বা অন্য কোন রোগে আক্রান্ত রোগীদেরকে দ্রুত খুলনা বা ঢাকায় নিতে হলে নেই এ্যাম্বুলেন্স’র কোন ব্যবস্থা। সরকারের দেয়া দুইটি এ্যাম্বুলেন্স তাও নষ্ট হয়ে পরে আছে হাসপাতালের মাঠে।
এছাড়া টেকনিশিয়ান না থাকায় নমুনা সংগ্রহে ননটেকনিশিয়ানদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য পদে টেকনিশিয়ান না থাকায় করোনা রোগীদের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করতে পারায় তাদেরকেও পাঠানো হয় বিভাগীয় শহর খুলনাতে।
তাই মোংলাবাসীর দাবি দ্রুত করোনা রোগীদের জন্য স্বাস্থ্য সম্মত আইসিইউ বেড, সেন্টাল অক্সিজেন ও এ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা চালু রাখাসহ প্রশাসনকে আরো কঠোর হওয়ারও দাবি জানায় তারা।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় ২৬ জনের পরিক্ষায় ১৪ জন করোনায় আক্রান্ত, মৃত্যু হয়েছে আরো একজন। জুন মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ২৩২ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১৩৮ জন করোনায় আক্রান্ত। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। ১২ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মোংলা নিজস্ব হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় মোংলার উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা করোনা রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে নিজস্ব বাসভবনে। এজন্য শঙ্কা ও ভয়ে দিন কাটছে স্থানীয়দের।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মলয় মল্লিক জানান, এই মুহুর্তে আমাদের বেশী প্রয়োজন সেন্টাল অক্সিজেন এবং রুগীদের জন্য আইসিইউ বেড। উপজেলায় এর কোন ব্যবস্থা না থাকায় এখানকার করোনা সংক্রমণ যারা পজেটিভ হচ্ছে তাদের বাড়ীতেই বা অন্য হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তার পরেও যারা বেশী আক্রান্ত হচ্ছে তাদের দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম