দীর্ঘ ২৭ দিন পর মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৭ নং জেটি এলাকায় নোঙ্গর করেছে থাই পতাকা বাহী জাহাজ এমভি এস পি এম ব্যাংকক। বাংলাদেশে প্রথম রাজধানীবাসীর যাতায়াতের ভোগান্তি কমাতে মেট্রোরেল তৈরির যন্ত্রাংশ বোঝাই করে বুধবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় বিদেশি জাহাজটি মোংলা এসে পৌঁছায়। সন্ধ্যা নাগাদ পরীক্ষামূলকভাবে মেট্রোরেলের কিছু যন্ত্রাংশ খালাস কাজ শুরু করে।
ঢাকার উত্তারা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের (রেলওয়ে কার) যন্ত্রাংশের প্রথম চালান মোংলা বন্দরের জেটি থেকে খালাস কাজ শুরু হয়েছে। মেট্রোরেলের (রেলওয়ে কার) যন্ত্রাংশের আমদানিকারক ঢাকার ডি এম টি সিএল।
যন্ত্রাংশ বোঝাই বিদেশী ওই জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনসিয়েন্ট ষ্টিমশীপ কোম্পানি লিঃ এর মহাব্যবহস্থাপক মোঃ ওহিদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে আরও ১৩৮ টি রেলওয়ে কার আসবে। যন্ত্রাংশ গুলো সব চলে আসার পর উত্তারা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিঃ মিঃ এবং পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম মেট্ররেল চলাচল শুরু করবে এবং উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিঃ মিঃ জন সাধারনের জন্য মেট্রোরেল তৈরি করা হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রথম চালানে ৬ টি মেট্রোরেলের যন্ত্রাংশ এ জাহাজটিতে আনা হয়েছে যা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে খালাস কাজ সম্পন্ন করে জাহাজটি মোংলা বন্দর ত্যাগ করবে।খালাসকৃত এ যন্ত্রাংশ বার্জে বোঝাই করে নৌ পথে রাজধানীর উত্তরার দিয়া বাড়ি এলাকায় পৌছানো হবে। আগামী মে মাসের মধ্যে মেট্রোরেলের কার বোঝাই ছয় টি জাহাজ এ বন্দর দিয়ে খালাস হওয়ার কথা রয়েছে। ২৪ টি জাহাজে করে ১৩৮ টি মেট্রোরেল
কার ও যন্ত্রাংশ এ বন্দর দিয়ে খালাস হবে বলে জানান তিনি। আর এ পন্য গুলো আনা হলে মেট্রোরেলের কাজ সম্পূর্ণ হবে।
বর্তমান সরকার মেট্টোরেল তৈরি করে রাজধানী বাসীর যাতায়াত ও যাত্রীদের ভোগান্তি কম হবে। এ মেট্রোরেলের মাধ্যমে প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৮০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে বলেও জানান তিনি।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যডমিরাল মোহম্মদ মুসা বলেন, প্রথম বারের মত মোংলা বন্দর দিয়ে দেশের মেট্রোরেলের (রেলওয়ে কার) যন্ত্রাংশ আসছে। এর আগে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ মোংলা বন্দর দিয়ে এসেছে। দিনে দিনে জাহাজ আগমনের সংখ্যা বাড়ছে। এতেই প্রমান করে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা কত বেড়েছে।’
এই বন্দরকে আরও সক্ষমতা ও গতিশীল করতে নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যেগুলো বাস্তবায়ন হলে পুরোপুরিভাবে এই বন্দর আন্তর্জাতিকভাবে নতুন মাত্রা পাবে। এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন বন্দরের সর্বোচ্চ পদস্থ এই কর্মকর্তা।
মেট্রোরেল কার যন্ত্রাংশ খালাসকারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস খুলনা ট্রেডার্সের সত্বাধীকারি সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে মোংলা বন্দর ব্যবহারে এখন সুবিধা পাচ্ছেন তারা। বন্দরের নতুন ও আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন হওয়ায় এটি ব্যবহারে তারা এখন লাভজনক অবস্থানে আছেন এবং সরকারের এ মেট্রোরেলের যন্ত্রাংশ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে খালাস করে প্রমাণ করা হবে মোংলা সমুদ্র বন্দর এখন অত্যাধুনিক ও পরিবেশ বান্ধব সমুদ্র বন্দরে রুপান্তরিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম