বন্দর কর্তৃক পশুর নদী ড্রেজিংয়ের বালু ফেলে কৃষিজমির ক্ষতি না করে কৃষকদের জীবিকা রক্ষার দাবিতে এবং ড্রেজিং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জমির মালিকদের ভয়-ভীতি প্রদর্শনের প্রতিবাদে মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের সাত গ্রামের জমির মালিকদের আয়োজনে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় মোংলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয় কৃষকরা দীর্ঘদিন থেকে বংশ পরম্পরায় সুন্দুরতলা, তেলিখালী, আমতলা, গাববুনিয়া, কলাতলা, কেয়াবুনিয়া ও চিলা গ্রামের অন্তর্গত পশুর নদীর পাড়ের কৃষি জমিতে কৃষি ও মাছ চাষ করে জীবন অতিবাহিত করে আসছে। কিন্ত সাম্প্রতিক সময়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ পশুর নদী ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় নদী ড্রেজিং করে সেই বালু তাদের কৃষিজমিতে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তারা জেনেছে তাদের ৭০০ একর কৃষি জমিতে এই বালু ফেলা হবে। এ ব্যাপারে কৃষিজমির মালিকদের কোন কিছু না জানিয়ে ড্রেজিং কর্মকান্ড শুরু করেছে। গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে এ জাতীয় কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ এবং নিন্দা জানানো হয়।
কৃষকদের না জানিয়ে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন কাজ শুরু করলে সঙ্গত কারণেই কৃষকরা তাতে বাধা প্রদান করেছে। সে কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গুন্ডা বাহিনী দ্বারা গ্রামবাসী ও কৃষকদের ভয়-ভীতি এবং হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। এমন কী ঠিকাদারের সন্ত্রাসীরা গত ১৭ এপ্রিল সশস্ত্র অবস্থায় রাতের বেলায় তেলিখালি গ্রামে যেয়ে গ্রামবাসীকে হুমকি দিয়ে আসে বলে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়। এমতাবস্থায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে এবং যেকোন সময়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে গ্রামবাসী। তাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গ্রামবাসী সরকার এবং দেশবাসীর কাছে জীবন এবং জীবিকার নিরাপত্তা দাবি করেন।
লিখিত বক্তব্যে গ্রামবাসী আরো বলেন, তারা কোন ক্ষতিপূরণ চায়না, কোন আর্থিক সহযোগিতা চায় না। তারা পূর্বপুরুষের কৃষিজমি রক্ষা করে সেখান থেকে জীবিকা সংগ্রহ করতে চায়। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসী কৃষিজমি ও কৃষকদের জীবিকা রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, সরকার ও প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোঃ ওবায়দুল সরদার। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে কৃষি জমির মালিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আলী রেজা মুকুল শিকদার, নজরুল ইসলাম হাওলাদার, বিজন কুমার বৈদ্য, মোঃ আলম গাজী, মোঃ আলাউদ্দিন শেখ, জাকির মোসাল্লি, হেম মন্ডল, ঝুমুর বেগম, সোমা মন্ডল প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এনএম