মোংলা উপজেলায় করোনা সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলা প্রশাসন কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করলেও অনেক জায়গায় তা মানছেন না সাধারন মানুষ। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলা চিলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ নজরুল ইসলাম নজু (৪০) করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার।
তিনি জানান, নজরুল ইসলাম বেশ কয়েকদিন যাবত জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে নিজ বাসায় অবস্থান করছিলেন। তাকে জিজ্ঞেস করলে খুলনায় একটি পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ ছিল বলে জানায়।
তিনি আরো বলেন, মোংলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় করোনা ভাইরাসের উপসর্গ চতুর্দিকে ছড়িয়ে পরছে। ভারত থেকে পন্য নিয়ে লাইটার ও কার্গো জাহাজ বন্দর চ্যানেল দিয়ে যাওয়ার সময় এখানে নঙ্গর করে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার করার সুত্রধরে এ এলাকায় অবাধ বিচরণ ও ঈদ পরবর্তী সময়ে লোকজন আসা-যাওয়ার কারণেই করোনার সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে গেছে মোংলাসহ এর আশ-পাশ এলাকায় বলে ধারণা প্রশাসনের। যার কারণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের চলাচলের উপর ৮দিনের কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, মাস্ক পরা ব্যতীত কাউকে পাওয়া গেলে তাকে আইনানুগ শাস্তির ব্যবস্থা, পৌর শহরে প্রবেশ সংকুচিত, ঔষধ, জরুরি কৃষিপণ্য ব্যতীত সকল দোকানপাট বন্ধ, মাছ-মাংস-ফলের দোকান ও কাঁচা বাজার ব্যতিত সকল দোকান বন্ধ, নদী পাড়াপারে সীমিত, ভারতীয় নৌযানের নাবিকরা শহরে উঠা নিষেধসহ কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। কিন্ত অনেক স্থানেই তা মানার চেষ্টা করছেন না সাধারন মানুষ। এতে এ এলাকায় করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে স্থানীয় অনেকেই জানিয়েছে। গত এক সপ্তাহে ১০৯ জনের করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করানো হয় তার মধ্যে ৬৩ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। বর্তমানে শনাক্তের হার প্রায় ৭০ শতাংশ।
স্থানীয় সওকাত হোসেন জানায়, ঈদ উদযাপনের নামে মোংলায় রাত ১২ টার পরও দোকান খোলা দেখা যাচ্ছে। ভারত থেকে আগত লাইটার জাহাজ থেকে শত শত নাবিক মোংলায় নামছে, মাক্স পরিধান ছাড়া, সামাজিক দুরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি ছাড়া অবাধ চলাচল এর কারণে করোনায় আজ আমাদের নিরাপদ মোংলা থেকে একে একে জীবন কেড়ে নিচ্ছে। অনেক এলাকায় শোনা যাচ্ছে তাদের পরিবারের লোক অসুস্থ হয়ে বাসায় অবস্থান করছে। এ মরণঘাতী করোনায় আরো যেন কত প্রাণ কেড়ে নিবে কে জানে। তার পরেও আল্লাহর উপর ভরসা করা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই বলে জানায় তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম