খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ | ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গাজীপুরের শ্রীপুরে বোতাম তৈরির কারখানায় আগুন; নিহত ১, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট
  শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের বিষয়ে নিশ্চিত নয় ট্রাইব্যুনাল

মোংলায় কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ৬৮ জন্মবার্ষিকী পালিত

মোংলা প্রতিনিধি

‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা, তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৬৮তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়।

১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর (২৯ আশ্বিন) বরিশাল জেলার আমানতগঞ্জের রেডক্রস হাসপাতালে জন্ম গ্রহন রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর। পিতা ডাঃ শেখ ওয়ালীউল্লাহ (১৯৩০-১৯৯৬), মাতা শিরিয়া বেগম (১৯৩৯ – ২০০৪)। পৈতৃক নিবাস বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার অন্তর্গত সাহেবের মেঠ গ্রামে। ১০ ভাই-বোনর মধ্যে ছিলেন রুদ্র সবার বড়।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টায় দিবসটি উপলক্ষে কবির পৈতৃক বাড়ি মোংলার মিঠেখালীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ‘রুদ্র স্মৃতি সংসদ’। সকাল ৯টায় মিঠাখালী বাজার থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি মিঠাখালী বাজার প্রদক্ষিণ করে কবির মাজারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় কবির কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। পরে সেখানে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া শারমিন, রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও রুদ্রের অনুজ সাংবাদিক সুমেল সারাফাত, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুর আলম শেখসহ রুদ্র স্মৃতি সংসদ এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যরা।

১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মারা যান রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। অকালপ্রয়াত এই কবি নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে। সাম্যবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্যচেতনা ও অসাম্প্রদায়িকবোধে উজ্জ্বল তার কবিতা। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’- এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন- ‘দিন আসবেই- দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্র প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তার কাব্যের আরেক প্রান্তরজুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।

মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

শৈশবের অধিকাংশ সময় তাঁর কেটেছে নানাবাড়ি মিঠেখালি গ্রামে (বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার অন্তর্গত)। এখানকার পাঠশালাতেই তাঁর পড়াশুনা শুরু। ১৯৬৪ : দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন সাহেবের মেঠ গ্রামে তাঁর নানার নামে প্রতিষ্ঠিত “ইসমাইল মেমোরিয়াল স্কুল”-এ।

উনসত্তুরের গণঅভ্যুত্থান। কিশোর শহিদুল্লাহ যোগ দেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গণআন্দোলনের কর্মসূচিতে। হরতাল, মিছিল, মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নেন তিনি।

উল্লেখ্য, মৃত্যুর ৩২ বছর পরে এবছরের গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আইরীন ফারজানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে পদকপ্রাপ্ত অন্যান্যদের সঙ্গে ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নাম প্রকাশ করা হয়।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!