সর্বশেষ দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভা মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি। সে নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছিলেন মোংলা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জুলফিকার আলী। এ সময় মেয়রের পাশাপাশি পৌরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলরও নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি ও জামায়াত ঘরোনার লোক। এরপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় ১০ বছর মেয়াদে মেয়র হিসেবে জুলফিকার আলী ও কাউন্সিলর পদে তার দলীয় সমর্থক লোকই পৌরসভার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এখনো পর্যন্ত এ পৌরসভায় আর কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।
এ কারণে অবিলম্বে নতুন করে পৌর নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা ও মেয়রের অপসারণের দাবিতে রোববার বেলা ১১ টায় মোংলা শহরের চৌধুরী মোড়ে স্থানীয় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও নাগরিক সচেতন সমাজসহ মোংলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশাসহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়রসহ অধিকাংশ কাউন্সিলর বিএনপি’র নেতা কর্মী হওয়া সত্বেও বিশেষ একটি প্রভাবশালী মহলের নেপথ্যের ছত্রছায়ায় নির্বাচন ছাড়াই মেয়র ও কাউন্সিলরা অতিরিক্ত ৫ বছর ধরে ক্ষমতা ভোগ দখল করছেন। এ নিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে চলছে নানা ক্ষোভ, হতাশা আর গুঞ্জন।’
ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ আরও বাড়িয়ে নিতেই বর্তমান মেয়র তার অনুসারীদের দিয়েই উচ্চ আদালতে নির্বাচনের আগে রিট পিটিশন দাখিল করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
বক্তারা বলেন, ‘২০১৫ সালের নভেম্বরে নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলেও মেয়র তার অনুসারীদের দিয়ে সীমানা জটিলতার মামলা দিয়ে ভোট গ্রহণ স্থগিত করান। সেই থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মামলা ও প্রশাসনিক জটিলতায় মোংলা বন্দর পৌরসভার নির্বাচন আর অনুষ্ঠিত হয়নি।’
প্রথম শ্রেনীর গুরুত্বপূর্ণ এ পৌর সভার নির্বাচনের দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন সমাবেশে বক্তৃতা করেন সুজনের স্থানীয় সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুর আলম শেখ, মোংলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাসান গাজী, অধ্যাপক শেখ নজরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মহসিন হোসেন, শ্রমিক নেতা আব্দুল সালাম ব্যাপারী, নারী নেত্রী কমলা সরকার, সুজনের স্থানীয় সহ সভাপতি মোঃ নাজমুল হক প্রমুখ।
এ বিষয়ে বর্তমান মেয়র জুলফিকার আলী বলেন, ‘স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা একের পর এক মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। মামলা দিয়ে নির্বাচন বানচালের ঘটনার সাথে তিনি কোন ভাবে জড়িত নন।’
খুলনা গেজেট/এনএম