রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার বরখাস্তকৃত মেয়র আব্বাস আলীর ব্যক্তিগত চেম্বার থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে আড়াই ঘণ্টার তল্লাশিকালে ২১টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে আরএমপির কাটাখালী থানার পুলিশ।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ আব্বাসের ক্যাডার বাহিনীর হাতে অনেক অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। পুলিশ সেসব উদ্ধারে ভূমিকা নিচ্ছে না। আব্বাস গ্রেপ্তার হয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকলেও তার ক্যাডাররা এলাকায় চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছে জানিয়ে এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের সময় এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ভিড় করেন।
জানা গেছে, আরএমপির কাটাখালী থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ শনিবার বিকাল ৩টার দিকে কাটাখালী মাসকাটা দিঘী হাইস্কুল ভবন সংলগ্ন আব্বাসের চারটি চেম্বারে তল্লাশি করেন। এসব চেম্বারের নিচতলা ও উপরতলার দুটি পৃথক চেম্বার থেকে মোট ২১টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে তলোয়ার, রামদা, ড্যাগার, কিরিচ ও চাইনিজ কুড়াল। পুলিশ উদ্ধার করা অস্ত্রের তালিকা করে থানায় নিয়ে যায়।
কাটাখালী থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান জানান, এসব দেশীয় অস্ত্র রাখা বেআইনি। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে পৃথক মামলা হবে।
এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগে আরও জানা গেছে, আব্বাস তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী হলেও তাকে রিভলবার কেনার লাইসেন্স দেওয়া হয়। লাইসেন্সকৃত অস্ত্রটি এখন কোথায় কী অবস্থায় রয়েছে তার কোনো খোঁজ করেনি পুলিশ। সেই সঙ্গে আব্বাসের ৩৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনীর অনেকের কাছেই অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। আব্বাসের ক্যাডাররা এসব আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে বিভিন্ন সময় যা এলাকার মানুষ দেখেছেন। কিন্তু পুলিশ তার ক্যাডার বাহিনীর কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি। ফলে উদ্ধার হয়নি কোনো অবৈধ অস্ত্র।
এ বিষয়ে কাটাখালী থানার ওসি আরও বলেন, আব্বাস ২৪ নভেম্বর গা-ঢাকা দিলে তার ক্যাডাররাও এলাকা ছাড়ে। সন্ত্রাসী বাহিনীর কেউ এলাকায় ফিরেছে- এমন তথ্য পুলিশের কাছে নেই।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণকে কেন্দ্র করে গত ২৩ নভেম্বর আব্বাসের একটি অডিও ভাইরাল হয়। তাতে আব্বাসকে বলতে শোনা যায়- জীবন গেলেও তিনি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করতে দেবেন না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও আব্বাস কটূক্তি করেন। ফলে কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে আব্বাসকে বহিষ্কার করা হয়।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে গত ২৫ নভেম্বর নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও রাসিকের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিন বোয়ালিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। ২ ডিসেম্বর র্যাব সদস্যরা রাজধানীর ইশা খাঁ রাজমনি হোটেল থেকে আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে বোয়ালিয়া থানায় সোপর্দ করেন। তিন দিনের রিমান্ড শেষে আব্বাস বর্তমানে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। এরই মধ্যে গত ১০ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আব্বাসকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। আব্বাসের শাস্তির দাবিতে কাটাখালীর মানুষ টানা ১০ দিন বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই