খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

মুর্শিদাবাদে স্হায়ী নদী ভাঙন রোধের দাবিতে বহরমপুরে বিক্ষোভ 

মোহাম্মদ সাদউদ্দিন, কলকাতা

দীর্ঘদিন যাবৎ মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা থেকে জলঙ্গী সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা গঙ্গা নদী ভাঙনের কবলে। শত শত বাড়ি, ঘর, ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , চাষের জমি, বাগান, ব্যবসা কেন্দ্র ইত্যাদি তলিয়ে গেছে নদীতে তবুও হেলদোল নেই কোন সরকারের। এর স্থায়ী সমাধানের দাবিতে মুর্শিদাবাদ জেলা শাসকের নিকট গণ ডেপুটেশন দিল সোস্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটি।

এদিন বহরমপুরের ওয়াই এম এ-এর মাঠ থেকে বিশাল এক বিক্ষোভ মিছিল বাসস্ট্যান্ডের সামনে দিয়ে টেক্সটাইল কলেজ মোড় পর্যন্ত পৌঁছায়। প্রতিটা পদে ভাঙনের স্থায়ী সমাধান ও রাজ্য সরকারকে তৎপর হতে দাবি জানান হয়। হাজারো কর্মী সমর্থক ও ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে নিজেদের দাবি পেশ করেন। টেক্সটাইল কলেজ মোড় থেকে এসডিপিআই-এর ৫ জন প্রতিনিধি মুর্শিদাবাদ জেলা শাসক শ্রী রাজর্ষি মিত্র (আইএএস)-এর নিকট ডেপুটেশন দিতে যান। প্রতিনিধি দলে ছিলেন– রাজ্য সভাপতি তায়েদুল ইসলাম, সহ সভাপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক হাকিকুল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মাসুদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।

রাজ্য সভাপতি তায়েদুল ইসলাম বলেন— অবিলম্বে ভাঙ্গন প্রতিরোধে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা সরকারিভাবে গ্রহণ করা, সামশেরগঞ্জ ও লালগোলার ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে বাসযোগ্য জায়গায় পুনর্বাসন দেওয়া, মহিলা বিড়ি শ্রমিক সহ ভাঙ্গনে জীবিকা হারানো মানুষগুলির জন্য এককালীন ক্ষতিপূরণ সহ উপযুক্ত জীবিকার ব্যবস্থা করা ও ওয়াকফ বিল প্রত্যাহারের দাবি পেশ করা হয়েছে জেলা শাসকের নিকট। জেলা শাসক অফিসের পাশেই টেক্সটাইল কলেজ মোড়ে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন— সামশেরগঞ্জের গঙ্গা ভাঙ্গন এলাকার উত্তর চাচন্ড, প্রতাপগঞ্জ, মহীশটোলা থেকে লালগোলা ও জলঙ্গি পর্যন্ত ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের মর্মান্তিক অবস্থা স্বচক্ষে অনুধাবন করে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের অসহনীয় অবস্থা দূরীকরণে অবিলম্বে উপযুক্ত সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আজ দাবি পত্র আমরা পেশ করেছি জেলা শাসককে। বিগত ১০ বছরে ধীরে ধীরে শয়ে শয়ে বিঘে জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বিশেষত গত দু-তিন বছরে কয়েকশো পরিবারের ঘরবাড়িও নদীগর্ভে চলে যাওয়ার কারণে তাঁরা আক্ষরিক অর্থে বাস্তুচ্যুত ও জীবিকা হারা হয়ে অমানবিক পরিবেশে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। জীবনধারণের ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এমনকি গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র‌ও মানুষ বাঁচানোর সুযোগ পায়নি। নদীগর্ভে এখনো তলিয়ে যায়নি এমন বহু বাড়ি ফাটল এবং ভাঙ্গনের জন্য মানুষের বসবাসের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের আশঙ্কায় বহু মানুষ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। লালগোলায় ভাঙ্গন কবলিত এলাকা গুলিতে মানুষের ঘরে না আছে খাবার, না আছে পানীয় জল, না আছে শৌচালয়ের সুবিধা। এমনকি বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলি পশুর মতো নারকীয় অবস্থায় দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। এমত অবস্থায় ইউনিয়ন সরকার এবং রাজ্য সরকারের অবস্থান খুবই দুঃখজনক। অবিলম্বে জেলার মানুষকে সজাগ, তৎপর ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

ওয়াকফ বিল প্রসঙ্গে বক্তব্য দিতে গিয়ে রাজ্য সহ সভাপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন— ইউনিয়ন সরকার মুসলিম সমাজের নিজস্ব সম্পদ ওয়াকফ সম্পত্তি দখল করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ওয়াকফ বিল নিয়ে এসেছে। ইতিমধ্যেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, মুসলিম সমাজ সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিরোধীতার মুখে যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠাতে বাধ্য হয়েছে।পাঠানো হয়েছে এটা ভেবেই দেশের মুসলিম সম্প্রদায় যদি ঘুমন্ত অবস্থায় থেকে যায় তবে গঙ্গা ভাঙনের মতোই অচিরেই মুসলিমদের অস্তিত্ব বিলীন করে দেবে কেন্দ্র সরকার। নদী ভাঙন বিস্তীর্ণ এলাকায় ত্রিপল প্রদান করা নিয়ে জেলার তিন জন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদকে কাঠগড়াই দাঁড় করিয়ে জেলার মানুষকে আন্দোলনমুখী করতে বক্তব্য রাখেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক হাকিকুল ইসলাম। তিনি ঘোষণা দেন অবিলম্বে যদি নদী ভাঙনের স্থায়ী সমাধান না করে সরকার তবে মুর্শিদাবাদ জেলায় বৃহত্তম আন্দোলন গড়ে তুলতে মূল্য ভূমিকা নেবে এসডিপিআই।

বিড়ি শ্রমিকদের জীবিকা নিয়েও বক্তব্য রাখেন মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মাসুদুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা রুনা লাইলা, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (অর্গানাইজিং) হাবিবুর রহমান, দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মোঃ জাইসুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন সেখ।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!