সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে নাবিকদের মুক্তির বিষয়টি জানাতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপ। তবে সেখানে তারা মুক্তিপণের বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। রোববার বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদে কবির গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জাহাজের মালিক প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এস আর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী মেহেরুল করীম বলেন, ‘দুদিন আগে আমরা আমাদের জাহাজের প্রতিটি ক্রু-নাবিকের ভিডিও নিয়ে তাদের সুস্থতা নিশ্চিত করি। প্রতিটি নিয়ম মেনে কাজ করা হয়েছে। জাহাজে ৬৫ জন জলদস্যু ছিল। শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে জাহাজের ক্যাপ্টেন আমাকে জানান, জলদস্যুরা জাহাজ থেকে স্পিডবোটে করে নেমে গেছে।
মুক্তিপণ প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ক্ষমা চাচ্ছি। কোনো মুক্তিপণের বিষয়ে আমি আপনাদের কিছু বলতে পারবো না। সকলের সঙ্গে আমাদের এই বিষয় নিয়ে এগ্রিমেন্ট হয়েছে। আমি এগ্রিমেন্টের বাইরে যেতে পারবো না।’
মেহেরুল করীম বলেন, ১৩ বছর আগে আমাদের আরেকটি শিপ জাহান মনি জিম্মি হয়।
তখন আমাদের অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে জাহাজটি মুক্ত করতে সময় লেগেছিল। তবে তখনকার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমরা দ্রুত এমভি আবদুল্লাহ মুক্ত করতে পেরেছি।
জাহাজ মুক্ত করার প্রক্রিয়া উল্লেখ করে মেহেরুল করীম বলেন, ‘জাহাজটি জিম্মি হওয়ার পর থেকে আমরা প্রতিনিয়ত সেটির পজিশন ট্র্যাক করতাম। কোথা থেকে কোথায় নেওয়া হচ্ছে তা সার্বক্ষণিক নজরদারি করতাম। জিম্মির কয়েকদিন পর জলদস্যুদের একজন যিনি ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন তিনি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। এরপর সকল আন্তর্জাতিক প্রোটোকল মেনে আমরাও আমাদের দিক থেকে যোগাযোগ শুরু করি। এভাবে টানা মাসখানেকের যোগাযোগের সফলতাতেই মুক্ত হয় এমভি আবদুল্লাহ।’
কবীর গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, ‘কিছু জিনিস আমাদের গোপন রাখতে হবে। আমরা জলদস্যুতাকে প্রোমট করতে পারি না।’
শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, ১৯ বা ২০ এপ্রিল এমভি আবদুল্লাহ দুবাই পৌঁছাবে। এরপর নাবিক-ক্রুরা ফ্লাইটে বা জাহাজে করে বাংলাদেশে ফিরবে। তিনি জানান, নাবিক ও ক্রুদের সঙ্গে কথা বলেই ঠিক করা হবে তারা কিভাবে দেশে আসবেন।
এদিকে সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, মুক্তিপণের পরিমাণ ৫ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৫ কোটি টাকা! সেখানকার পান্টল্যান্ড মিরর নামের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম