মিয়ানমারের একটি স্কুলে হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ করেছে সেনাবাহিনী। এতে ওই স্কুলের ছয় শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অন্তত ১৭ জন। এছাড়া আটক করা হয়েছে আরও ২০ শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম মিজ্জিমা ও ইরাবতী নিউজ পোর্টালের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার যখন হামলা চালায়, সেসময় ক্লাস চলছিল স্কুলটিতে। ওপর থেকে ঢালাও গুলিবর্ষণে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় অন্তত চারজন শিক্ষার্থী এবং আহত অন্যান্যদের নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু হয় আরও দুইজনের।
স্কুলে গুলিবর্ষণের পাশাপাশি কথিত ‘সন্ত্রাসীদের’ খুঁজতে লেত ইয়েত কোং গ্রামে সেনাবাহিনীর একটি দল তল্লাশি চালিয়েছে বলেও রয়টার্সকে জানিয়েছেন ওই গ্রামের দুই বাসিন্দা। নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের নাম প্রকাশ করেনি রয়টার্স।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই হামলা ও তল্লাশি অভিযানের ছবি পোস্ট করেছেন অনেকেই। সেসব ছবিতে ওই স্কুলের বুলেটবিধ্বস্ত দেওয়াল ও বিভিন্ন স্থানে রক্তের ছোপ দেখা গেছে।
সোমবার এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন জান্তাবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মি (কিয়া) ও পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (পিডিএফ) ‘সন্ত্রাসীরা’ দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ের লেত ইয়েত কোং গ্রামের ওই স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছে— এই তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। গ্রামটিকে ‘সন্ত্রাসীরা’ তাদের অস্ত্র পরিবহনের রুট হিসেবে ব্যবহার করে বলেও দাবি করা হয়েছে বিবৃতিতে।
‘সন্ত্রাসীরা আশ্রয় নিয়েছে— গোপন সূত্রে এই তথ্য জানার পর লেত ইয়েত কোং গ্রাম ও সেই গ্রামের স্কুলটিতে অভিযান চালানোর উদ্দেশে গিয়েছিল। সে সময় কিয়া ও পিডিএফের সন্ত্রাসীরা সেনা সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তখন আত্মরক্ষার্থেই সেনাবাহিনীকে গুলিবর্ষণ করতে হয়েছে।’
সন্ত্রাসীরা গ্রামের সাধরণ মানুষকে ‘মানববর্ম’ হিসেবে ব্যবহারের কারণে হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। পাশপাশি ওই স্কুল ও গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ১৬টি হাতে বানানো বোমা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে সেনা বাহিনী।