অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ চলছে মিয়ানমারজুড়ে। বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আরও ১২ জন নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এদিকে, সেনা অভ্যুত্থানের পর এই প্রথম শনিবার (১৩ মার্চ) বেসামরিক সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রধান জনসম্মুখে ‘বিক্ষোভের’ ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে রয়টার্স জানায়, মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মানদালায় বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের গুলিতে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। পায়ায় শহরে একজন নিহত হয়েছেন। দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে পুলিশের গুলিতে দুই জন নিহত হয়েছেন। আগের রাতেও সেখানে তিন জন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছিলেন।
মানদালয়ের একজন এক্টিভিস্ট মায়াত থু জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র মানুষদের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রের মতো আচরণ করছেন। তিনি বলেন, গুলিতে ১৩ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
সি থু তুন নামের একজন বিক্ষোভকারী দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখেছেন। যাদের মধ্যে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু। তিনি বলেন, একজনের উরুতে গুলি লেগেছে। অপরজন গুলিতে মারা গেছেন।
পায়ায় শহরের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনী একটি অ্যাম্বুলেন্স আটক দেয়। যার ফলে একজন আহত ব্যক্তি মারা গেছেন।
ম্যাগওয়ে প্রদেশের চৌক শহরে একজন ট্রাক ড্রাইভারকে বুকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
রয়টার্স জান্তা সরকারের একজন মুখপাত্র ফোন করে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। জান্তা চালিত এমআরটিভিতে প্রচারিত সন্ধ্যার খবরে আন্দোলনকারীদের ‘অপরাধী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিস্তারিত জানায়নি।
অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানায়, চলমান আন্দোলনে মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত ৭০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
এই সহিংসতার ঘটনা এমন সময় ঘটলো যখন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের নেতারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেন। এছাড়া একই দিনে স্বঘোষিত বেসামরিক সরকারের কোনো নেতা প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে বক্তব্য দিলেন।
ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টির সিনিয়র নেতা মাহান উইন খাইং থান গোপনস্থান থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘এখন জাতির এক কালো অধ্যায় চলছে। ভোর খুব নিকটে।’
মিয়ানমারের বহিষ্কৃত আইন প্রণেতারা তাকে ভারপ্রাপ্ত উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত করেন। তারা একটি বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। সূত্র: রয়টার্স
খুলনা গেজেট/কেএম