সরকার মিলগেটে সরু ও মাঝারি মানের মিনিকেট চালের দাম নির্ধারণ করার চার দিন পার হলেও খুলনার পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে নির্ধারিত দামে সরবরাহ বাড়েনি, অথচ দাম বেড়েছে খুচরা বাজারে। চালের দাম নির্ধারণের পর কেজি প্রতি ৩-৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চারদিন আগেও যে দামে চাল বিক্রি হয়েছে এখন সে তুলনায় কেজি প্রতি দাম ৩-৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আগে ভাল মানের সরু মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ৫৮ টাকা, আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৬২/৬৩ টাকা। মাঝারি মানের মিনিকেট বিক্রি হয়েছিল ৪৭/৪৮ টাকা, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৫২/৫৩ টাকা।
মোটা চালসহ অন্যান্য চাল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি বাসমতি ৬৫ টাকা, বালাম ৫২ টাকা, মোটা ও স্বর্ণা ৪৫ টাকা, আঙুর বাসমতি ৬৫ টাকা, পরস বালাম ৫০-৫২ টাকা, ময়ুর ২৮ চাল ৫০ টাকা, মজুমদার ২৮ চাল ৫০ টাকা, ইরি আতপ ৪০ টাকা, ভাইটাল (বটিয়াঘাটা) ৭০ টাকা, বিআর ২৮ ৫০ টাকা, চিনিগুড়া চাল ১০০ টাকা, নাজিরশাহ ৬০ টাকা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, মিল গেটে সরকার চালের দাম নির্ধারণ করার পরই খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়ে গেল। অথচ নতুন দামে এখনো মিলাররা চাল সরবরাহ স্বাভাবিক শুরু করেনি। তাহলে দাম বাড়লো কেন-এমন প্রশ্ন ক্রেতাদের। বাজারে সরকারের তদারকি বাড়ানো এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তারা। এছাড়া তারা মিল গেটের মত অতি দ্রুত খুচরা পর্যায়েও দাম নির্ধারণের জোর দাবি জানান। অন্যথায় মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠবে। বেশি বিপাকে পড়বে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।
খুচরা ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম বলেন, সরকার দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পর পাইকাররা ভাল ও মাঝারি মানের ৫০ কেজির মিনিকেট চালের দাম বস্তা প্রতি ১৫০-২০০ টাকা বাড়িয়েছে। ফলে আমাদেরও দাম বাড়াতে হয়েছে।
পাইকারি ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদিন জানান, পূর্বের চাল থাকায় তিনি আগের দামেই চাল বিক্রি করছেন। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা পূর্বের দামে চাল কিনেও অনেক সময় বেশি দামের চালান দেখান।
এদিকে চালের মূল্য বৃদ্ধি রোধে সরকার গেল মঙ্গলবার মিল গেটে সরু ও মাঝারি মানের মিনিকেট চালের দাম নির্ধারণ করে দিলেও খুলনার চালকল মালিকদের মধ্যে তা নিয়ে ছিল ভিন্নমত। বুধবার থেকে সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে নতুন দামে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি।
উল্লেখ্য, ২৯ সেপ্টেম্বর সরকার মাঝারি ও সরু চালের পাইকারি মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চালকল মালিকদের বৈঠকে এ দাম নির্ধারণ হয়। নতুন দর অনুযায়ী, প্রতি কেজি সরু মিনিকেট চাল ৫১ টাকা ৫০ পয়সা ও প্রতি ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ৫৭৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে। মাঝারি মানের চাল প্রতিকেজি ৪৫ টাকা ও বস্তা ২ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি করতে হবে।
বুধবার থেকে দেশের সব চালকল মালিককে নতুন এই দামে চাল বিক্রি করতে বলা হয়েছিল। কেউ তা না করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাল ব্যবসায়ীরা এই দামে চাল বিক্রি না করলে ১০ দিনের মধ্যে সরু চাল আমদানি করা হবে বলে তখন জানান খাদ্যমন্ত্রী। বুধবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে চালকলগুলোতে নতুন দামে বিক্রি নিশ্চিত করতে ম্যাজিস্ট্রেট ও খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অভিযান চালানোর কথা।
খুলনা গেজেট /কেএম/এমএম