অভিষেক টেস্টে কাইল মায়ার্সের ডাবল সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশকে ৩ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর মধ্যে দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বাধিক রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়েছে ক্যারিবীয়রা। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়েছে।
২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করার রেকর্ড রয়েছে ক্যারিবীয়দের। অভিষেক টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করা ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান মায়ার্স। এর আগে টিপ ফস্টার, লরেন্স রই, ব্র্যান্ডন কুরুপ্পু, ম্যাথু সিনক্লেয়ার, জ্যাক রুডলফ সাদা পোশাক গায়ে জড়িয়েই ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছিলেন।
চট্টগ্রাম টেস্টের শেষ সেশনে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ১২৯ রান। আর বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৭ উইকেট। চা বিরতি থেকে ফিরে পর পর দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসানরা।
যদিও টাইগার বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরিটাকে দেড়শো পেরুনো ইনিংসে রূপ দেন কাইল মায়ার্স। শেষ দিন দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন অভিষিক্ত দুই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান মায়ার্স এবং এনক্রুমাহ বোনারের জুটি। এই দুজনে চতুর্থ উইকেটে যোগ করেছেন ২১৬ রান।
যদিও পঞ্চম দিনের শুরুতেই মায়ার্স-বোনারের জুটিতে ভাঙন ধরাতে পারতো বাংলাদেশ। তিনটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। ব্যক্তিগত ৪৭ রানে তাইজুল একটি বল মায়ার্সের প্যাডে আঘাত করেছিল। কিন্তু সেই বাংলাদেশের ফিল্ডারদের সেই আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার।
এরপর ৪৯ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আবারও জীবন পান মায়ার্স। সেই সময় স্লিপে সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। আউট হতে পারতেন বোনারও। নাঈম হাসানের এক ঘূর্ণি বল আঘাত করেছিল বোনারের প্যাডে। আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলেও বাংলাদেশ রিভিউ নেয়নি।
চা বিরতি থেকে ফিরে দারুণ খেলতে থাকা বোনারকে এলবিডব্লিউ করে নিজের শিকার বানিয়েছেন তাইজুল। ২৪৫ বলে ৮৬ রানের ইনিংস খেলেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এর ৫ ওভার পরেই জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে বোল্ড করে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান নাঈম হাসান।
পঞ্চম উইকেট পতনের পর বাংলাদেশের বোলারদের ওপর আরও চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন মায়ার্স। প্রায় প্রতিটি ওভারেই তাইজুল-নাঈমদের সীমানার বাইরে আছড়ে ফেলেছেন তিনি। ৩০৩ বলে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ২১০ রানে অপরাজিত থেকেছেন মায়ার্স।
২০ রান করে শেষদিকে তাইজুলের বলে বোল্ড হয়েছেন জশুয়া ডি সিলভা। কেমার রোচ কোনো রান করেই মিরাজের বলে লেগ স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন সাইফ হাসানের হাতে। এরপর রাকিম কর্নওয়ালকে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন মায়ার্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস): ৪৩০/১০ (ওভার ১৫০.২) (সাকিব ৬৮, মিরাজ ১০৩, সাদমান ৫৯, ওয়ারিকান ৪/১৩৩, কর্নওয়াল ২/১১৪)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (প্রথম ইনিংস): ২৫৯/১০ (ওভার ৯৬.১) (ব্রাথওয়েট ৭৬, বোনার ১৭, মায়ার্স ৪০, ব্লাকউড ৬৮, সিলভা ৪২; মিরাজ ৪/৫৮, মুস্তাফিজ ২/১৪৬, নাইম ২/৫৪, তাইজুল ২/৮৪)
বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস): ২২৩/৮ (ওভার ৬৭.৫) (মুমিনুল ১১৫, লিটন ৬৯, মুশফিক ১৮, ওয়ারিকান ৩/৫৭, কর্নওয়াল ৩/৮১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (দ্বিতীয় ইনিংস): ৩৯৫/৭ (১২৭.২ ওভার ) (কাইল মায়ার্স ২১০*, বোনার ৮৬, ক্যাম্পবেল ২৩, ব্রাথওয়েট ২০, মিরাজ ৪/১১২ তাইজুল ২/৯১ নাঈম ১/১০৫)