পরিবেশ বান্ধব আধুনিক ‘ডগা কাটিং’পদ্ধতি ও ‘মালচিং পদ্ধতি’ ব্যবহার করে বারোমাসি জাতের লাউ চাষে অসাধারন সাফল্য দেখিয়েছেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর গোবরা গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী। উচ্চফলনশীল জাতের চারা রোপন করে আধুনিক কাটিং পদ্ধতি প্রয়োগে এসেছে এই সাফল্য। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক সার ও কিটনাশক ব্যাবহার না করে অর্গানিক পদ্ধতিতে এ লাউ চাষ করেন তিনি। এ পদ্ধতিতে লাউ চাষে খরচও কম।ফলে বাজারে চাহিদা থাকায় কৃষক লাভবান হয়েছেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর গোবরা গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে ২০ শতাংশ জমিতে সারা বছর ফলন দিতে সক্ষম উচ্চফলনশীল জাতের লাউয়ের আবাদ করেন আইয়ুব আলী।তিনি কৃষি বিভাগের পরামর্শে পলিথিন মালচিং (গাছের গোড়া মালচিং পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেয়া) করেন এবং আধুনিক ডগা কাটিং পদ্ধতিতে লাউ চাষ করেন। লাউ চাষে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে গাছের গোড়ায় কোকোডাস ব্যাবহার করেন তিনি।এতে লাউগাছ হয়েছে খুবই সজীব।আর গাছে ফলও ধরেছে ৩ থেকে ৪ গুন বেশী। এ পদ্ধতিতে তিনি লাউ চাষ করে প্রত্যাশার চেয়ে বিশী ফলন পেয়েছেন।এ লাউ খেতেও বেশ সুস্বাদু। তাই বাজারে এ লাউয়ের চাহিদা বেশী হওয়ায় দাম পেয়ে অনেক লাভবান হয়েছেন কৃষক।
গেপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর গোবরা গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের পরামর্শে ২০ শতাংশ জমিতে সারা বছর ফলন দিতে সক্ষম উচ্চফলনশীল জাতের লাউয়ের আবাদ করি।এ লাউ চাষে পরিবেশ বান্ধব মালচিং পদ্ধতি ও ডগা কাটিং পদ্ধতি ব্যহার করেছি।লাউ চাষে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে গাছের গোড়ায় কোকো ডাস্ট ব্যবহার করেছি। এতে আমার লাউ গাছে প্রচুর লাউ ধরেছে।আমি প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে ২শ থেকে আড়াইশ লাউ কাটি।এভাবে আমি ২ মাস লাউ বিক্রি করছি।আমার খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। আমি এপর্যন্ত একলক্ষ টাকার লাউ বিক্রি করেছি।আরো ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবো।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পার্বতী বৈরাগী বলেন, কৃষক আইয়ুব আলী কোকোডাস পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করেছেন।এই চারায় তিনি মালচিং ব্যাবহার করেছেন এবং ১-জি,২-জি,৩-জি কাটিং পদ্ধতিতে লাউ চাষ করেছেন। তিনি নিরাপদ সবজি উৎপাদন করেছেন।আমরা এই কৃষককে পরামর্শ দিয়েছি।কিছু দিন পরপর এই ক্ষেত দেখাশুনা করি এবং পরামর্শ দিয়ে থাকি।এ পদ্ধতি অবলম্বন করে তিনি প্রত্যাশার চেয়ে বেশী ফলন পেয়েছেন।তিনি রাসায়নিক সার ও কিটনাশক ব্যবহার বিহীন নিরাপদ সবজি উৎপাদন করেছেন।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড.অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে রোদ্র ও বৃষ্টিতে গাছের গোড়ায় ক্ষতি হয় না। ফলে ফসল খুব ভাল হয়।নতুন এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে উৎপাদন বৃদ্ধি করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করে কৃষক তার ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে।এ পদ্ধতিতে লাউ চাষ করে কৃষক খুবই খুশি কারন তার যথেষ্ট ফলন পেয়েছেন এবং লাভও ভাল হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএম