বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সুযোগ তৈরিতে জরুরি পদক্ষেপ চেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে লেখা দেশটির ছয় কংগ্রেসম্যানের ‘কথিত’ চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নজরে এসেছে। প্রাথমিকভাবে মন্ত্রণালয় মনে করছে চিঠিটি সত্য নয়। আপাতত বিভিন্ন উৎসের মাধ্যমে ওই চিঠির সত্যতা যাচাই করছে মন্ত্রণালয়।
যেহেতু চিঠিটির সত্যতা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি এবং হোয়াইট হাউজ বা যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকেও এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি তাই এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চায় না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ছয় কংগ্রেসম্যানের দেওয়া চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। এটা কোনোভাবেই কংগ্রেসম্যানের চিঠি হতে পারে না। চিঠির সত্যতার বিষয়ে এখনো কিছু পায়নি মন্ত্রণালয়। তবে বিভিন্ন সোর্স থেকে বের করার চেষ্টা চলছে, এটা সত্য নাকি মিথ্যা।’
মন্ত্রণালয়ের অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চিঠির ভাষা দেখে মনে হচ্ছে না এটি কংগ্রেসম্যানদের লেখা। তাছাড়া কংগ্রেসম্যানদের ওয়েবসাইটে এ চিঠির বিষয়ে আমরা এখনো কিছু পাইনি। তবে ফেসবুকে পাওয়া চিঠির ভাষা দেখে মনে হচ্ছে, যদি এটা সত্য হয়ে হয়ে থাকে তাহলে কেউ এটা করিয়েছে। যদি এমনও হয় তাহলেও এটি ওই কংগ্রেসম্যানদের জন্য লজ্জার বিষয়। একটা দেশের বিরুদ্ধে এ রকম একটা কাজ করা কূটনীতি শিষ্টাচার-বহির্ভূত আচরণ। এটা একটা ন্যক্কারজনক বিষয়।’
‘প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে লেখা কংগ্রেসম্যানদের চিঠি’ বলে যে তথ্য ও ছবি টুইটার-ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে সেই চিঠিটির সত্যতা ঢাকা পোস্টও এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই ওই চিঠির বিস্তারিত বিবরণ এখানে প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
আলোচিত ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের একজন হলেন, মার্কিন কংগ্রেসম্যান বব গুড। গত শুক্রবার তার নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং তার ভেরিফায়েড টুইট অ্যাকাউন্টে চিঠিটি প্রকাশ করেন গুড। তবে ওই চিঠিটি রিসিভ করা হয়েছে কি না বা উত্তর দেওয়া হয়েছে কি না এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য সেখানে নেই।
ওই চিঠির ওপরে তারিখ দেওয়া আছে ২৫ মে, ২০২৩।
চিঠিতে বব গুড ছাড়াও কংগ্রেসম্যান স্কট পেরি, ব্যারি মুর, টিম বারচেট, ওয়ারেন ডেভিডসন এবং কিথ সেলফের স্বাক্ষর রয়েছে।
কংগ্রেসম্যান বব গুড তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এক বছরেরও বেশি সময় আগে র্যাবকে একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং হত্যাকাণ্ডসহ অন্যান্য নৃশংসতার জন্য দায়ী একাধিক আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিন্তু মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শেখ হাসিনার সরকারের সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণকে ধীর করার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি। বরং তারা আমেরিকার জাতীয় স্বার্থে আঘাত করার জন্য চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে অবাধ নির্বাচনের একটি সর্বোত্তম সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সেনাদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি।
খুলনা গেজেট/কেডি