গত কয়েক দিনে সারা দেশে দলের প্রায় দুই হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, শত শত মানুষকে হত্যা এবং আহতদের পুরোপুরি বাদ দিয়ে সরকার দেশবাসীকে ভ্রান্ত ধারণা দিতে শুধু সরকারি স্থাপনাগুলোর কথা সামনে আনছে।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।
কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা জিনিস দেখবেন, যখনই তারা কথা বলছে, তারা কিন্তু কয়েকটা স্থাপনায় যে আক্রমণ হয়েছে, কিছু ধ্বংস হয়েছে, সে কথাগুলোই বলছে। এই যে পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে শত শত প্রাণ চলে গেল, সেই ব্যাপারে তারা কোনো কথা বলছে না।’
এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই আন্দোলনে কতজন শহীদ হয়েছেন, কত জন আহত হয়েছেন, সেই হিসাব কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। সেটা ছাত্রদের তো বটেই, সেই সঙ্গে পুলিশেরও যদি থাকে, সেটাও সরকারকে স্পষ্ট করে বলা উচিত। আমরা পত্রিকাগুলোতে দেখছি, ঢাকা মেডিকেলে অসংখ্য ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং মুমূর্ষু অবস্থায় আছেন।’
ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতা ও নাশকতার সঙ্গে বিএনপি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জড়ানোর প্রতিবাদ জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সরকার অত্যন্ত সচেতনভাবে একটা জিনিস প্রমাণ করতে চেয়েছে, এ আন্দোলন এবং পরবর্তীকালে যে ভাঙচুর হয়েছে এ সবকিছুর জন্য দায়ী হচ্ছে তারেক রহমান। এর একটাই উদ্দেশ্য তারেক রহমানকে হেয়প্রতিপন্ন করা, বিএনপি ও বিরোধী দলকে দায়ী করা এবং জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়া। এর সবগুলোই অমূলক, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলক।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। সেই পূর্বে যে আওয়ামী লীগকে দেখেছি, সেই আওয়ামী লীগ তো এখন নেই। এখনো তারা টিকে আছে সম্পূর্ণ রাষ্ট্র যন্ত্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর ভর করে। সে কারণেই আজকে দেশের এই করুণ অবস্থা।
ছাত্র আন্দোলনে মদদ দেওয়ার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে এটাকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আন্দোলনে থাকা আর নাশকতা এক জিনিস নাকি। নাশকতার মদদ তো দিচ্ছে সরকার। তারা চাচ্ছে যে এখানে নাশকতা হোক, সমস্যা হোক। বিএনপির ৪০ বছরের ইতিহাসে নেই বিএনপি রাষ্ট্রীয় স্থাপনার ওপর আক্রমণ করেছে।
খুলনা গেজেট/এইচ