বাংলাদেশে নির্যাতন, গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগের অর্থপূর্ণভাবে সাড়া দেয়া উচিত সরকারের। গতকাল বৃহস্পতিবার সংগঠনটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই দেশটির র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) কে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্টের অধীনে গুরুতর অধিকার লঙ্ঘনের জন্য অনুমোদন দিয়েছে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মোতায়েন থেকে বাদ দেয়া উচিত।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৪ মার্চ, ২০২২-এ, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশ সরকারকে ‘অবিলম্বে মানবাধিকার রক্ষাকারী এবং জোরপূর্বক নিখোঁজ ব্যক্তিদের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে তাদের সক্রিয়তা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং জাতিসংঘের প্রক্রিয়াগুলির সাথে সহযোগিতার জন্য প্রতিশোধমূলক কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।’
৩ মার্চ, ২০২২-এ, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার অফিস বাংলাদেশ সরকারকে নির্যাতনের বিরুদ্ধে কনভেনশনের অধীনে ২০১৯ এর দায়বদ্ধতার পর্যালোচনার সময় রিপোর্ট করা নির্যাতনের অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জানাতে তার প্রতিশ্রুতি অনুসরণ করার আহ্বান জানায়, যা তারা উপেক্ষা করেছে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে। একই দিনে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সাথে বৈঠকের সময়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন তাকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আরও উচ্চ-পর্যায়ের পদে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়োগ করতে বলেছিলেন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর এশিয়া ডিরেক্টর ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘে অধিকতর প্রভাব চাচ্ছে এবং একই সাথে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্তকে উপেক্ষা করছে।’ ‘বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র অপব্যবহারের অভিযোগ উপেক্ষা করে এবং তাদের কাজ পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হয়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দেশের অবস্থানকে বিপন্ন করছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর ভাষ্যমতে, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ ব্যক্তিকে নিরাপত্তা বাহিনী গুম করেছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক নিয়মিত গুমের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকার বারবার অস্বীকার করে আসছে।
মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ উপেক্ষা করার অভ্যাস বাংলাদেশ সরকারের রয়েছে বলে বিবৃতিতে মন্তব্য করেছে এইচআরডব্লিউ।।