নড়াইলের সাগর হত্যা রহস্য উন্মোচন করেছে যশোর পিবিআই। হত্যাকান্ডে জড়িত হরিচাঁদ বিশ্বাস (২২) নামে আরো এক যুবককে তারা আটক করেছে। এছাড়া দু’জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। নিহত সাগর দাস নড়াইল সদরের কুলইতলা গ্রামের বুদোই দাসের ছেলে।
পিবিআই সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দ্বৈপায়ন মন্ডল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নড়াইল সদর উপজেলার দক্ষিণ মাছিমদিয়া গ্রামে অভিযান চালান। এসময় তিনি সাগর হত্যায় জড়িত হরিচাঁদ বিশ্বাসকে আটক করেন। তিনি একই গ্রামের সমর বিশ্বাসের ছেলে। শুক্রবার তাকে নড়াইলের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এরআগে হত্যাকান্ডে জড়িত দুই আসামি নড়াইল সদরের উজিরপুর কুলইতলা গ্রামের কালিপদ দাসের ছেলে তপন দাস ও চিত্তরঞ্জন দাসের ছেলে মিলন দাসকে আটক করে পিবিআই। গাঁজা বিক্রির টাকা না পাওয়া ও প্রেমঘটিত বিষয়ে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে পিবিআই জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট নড়াইলের ধোপাখোলা গ্রামের জিল্লুর রহমানের বাড়ির পাশ থেকে সাগর দাসের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সাগরের পিতা হত্যা মামলা করেন। পিবিআই যশোর হত্যা মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দ্বৈপায়ন দুই এরআগে আসামি তপন দাস ও মিলন দাসকে আটক করলে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
তারা জানায়, নিহত সাগর দাস তপনের কাছ থেকে বাকিতে গাঁজা কিনে সেবন করত। গাঁজা বিক্রির ৫ হাজার টাকা বকেয়া হওয়ায় তপন টাকার জন্য চাপ দেয়। সাগর এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। অন্যদিকে, সাগরের সঙ্গে ধোপাখোলার বন্যা নামে এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বন্যার বোন বর্ষার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আরেক আসামি মিলনের। সেই সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ায় বন্যার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার ইচ্ছা পোষণ করে মিলন। কিন্তু তাতে সাগর বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। এ দুই কারণে সাগরকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসামিরা।
গত ২৭ আগস্ট সন্ধ্যারাতে বাড়ি থেকে সাগর সাইকেল নিয়ে বের হয়। এরপর তারা রাতে সাগরকে ডেকে নিয়ে ধোপাখোলার মাঠে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর লাশ প্রেমিকা বন্যার বাড়ির পাশে পাটগাদা ও কলাগাছের নিচে ফেলে দেয়। পরদিন লাশ উদ্ধার হলে আসামিরা সাগরের বাড়িতে গিয়ে কান্নাকাটি করে স্বজনদের সান্তনাও দেয়।
খুলনা গেজেট/নাফি