যশোরের চৌগাছার কৃষকরা বাণিজ্যিক ভাবে মাচায় লাউ চাষ করে সাফল্য পেতে শুরু করেছেন। কয়েক বছর আগেও অপরিকল্পিত ভাবে লাউ চাষ হলেও বর্তমানে তা পরিকল্পি ভাবে হচ্ছে। অধিকাংশ কৃষক নতুন এই পদ্ধতিতে সাফল্য পাওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে লাউ চাষের পরিধি।
তুলনা মূলক পরিশ্রম ও ব্যয় কম হওয়ায় মাচায় লাউ চাষে তারা বেশ লাভবান হচ্ছেন।
গৃহবধূ ফাতেমা খাতুন বলেন, মাঠে লাউ চাষ করায় এখন বাড়ির আঙিনায় সে ভাবে লাউ চাষ করা হয় না। তারপরও অনেক গৃহবধূ আঙিনায় খালি জায়গা ফেলে না রেখে লাউ লাগাচ্ছেন এবং তা নিজেরা খেয়ে বাজারে বিক্রিও করছেন।
উপজেলার মাশিলা, কদমতলা, তারিনিবাস, দেবুলাসহ বেশি কিছু মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, উর্বর ফসলি জমিতে পরিকল্পিতভাবে কৃষক মাচায় লাউ চাষ করেছেন। উন্নত জাতের লাউ চাষ করায় প্রতিটি মাচায় ডগায় ডগায় ধরে আছে লাউ। বর্তমানে বাজারে একটি লাউ প্রকার ভেদে ২৫ টাকা হতে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দাম ভালো পেয়ে খুশি কৃষক।
লাউ ক্ষেতে কাজে ব্যস্ত পৌর এলাকার তারিনিবাস মহল্লার ফজলুর রহমান বলেন, লাউ অত্যন্ত সুস্বাদু একটি সবজি। বাঙালি প্রতিটি পরিবারের কাছে প্রিয় একটি খাবার হচ্ছে লাউ। এক সময় বাড়ির আঙিনায় মাচা তৈরি করে গৃহিণীরা লাউ চাষ করতেন। অনেক সময় ঘরের পাশে লাউ বীজ লাগিয়ে চারা বের হলে তা ওই ঘরের চালে উঠিয়ে দেওয়া হতো। সেখানে যে লাউ হয়েছে তা পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি হতো। কিন্তু সময়ের সাথে পাল্টে গেছে অনেক কিছু, বাজারে লাউয়ের চাহিদা রয়েছে যথেষ্ঠ। সে জন্য কৃষক ফসলি জমিতে মাচায় লাউ চাষ শুরু করেছেন এবং বেশ লাভবান হচ্ছেন। তিনি চলতি মৌসুমে ১০ কাঠা জমিতে লাউ চাষ করে এ পর্যন্ত অন্তত ২৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন।
চৌগাছার প্রধান সবজি বাজারের আড়তদার কবির হোসেন, মজনুর রহমান, আইনাল হোসেন বলেন, সব ধরনের সবজি চাষের পাশাপাশি এখন লাউ চাষ হচ্ছে। কৃষক আধুনিক পদ্ধতিতে লাউয়ের চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। সাপ্তাহিক হাটের দিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিরা ব্যাপক ভাবে লাউ নিয়ে আসেন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চৌগাছায় উৎপাদিত লাউ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলাতে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশাব্বির হোসাইন বলেন, মাচায় লাউ চাষ নিঃসন্দেহে লাভজনক, আগে অল্প পরিসরে এই চাষ হলেও এখন তা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি অফিস চাষিদের উন্নত জাতের লাউ বীজ সরবাহের পাশাপাশি সার সরবাহ করছেন। ফসল উৎপাদনে কৃষক যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সে জন্য কৃষি অফিস সর্বদা খোঁজ খবর রেখে যাচ্ছে।
খুলনা গেজেট/ এএজে