খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ পৌষ, ১৪৩১ | ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ঢাকার চিঠি গ্রহণ করেছে দিল্লি, নিশ্চিত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মুখপাত্র
  ২০২৫ সালে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছুটি ৭৬ দিন, একটানা বন্ধ ২৮ দিন

ড্রাগন চাষে ঝুঁকছেন মহেশপুরের যুবকরা

পলাশ রহমান, মহেশপুর

সুস্বাদু দামি ড্রাগন ফল এখন চাষ হচ্ছে ঝিনাইদহের মহেশপুরে। অল্প সময়ে অল্প পুঁজিতে ড্রাগন ফল চাষ করে বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী হওয়ার বিশাল সুযোগ তৈরি হয়েছে এখানে। মিষ্টি ও টক-মিষ্টি স্বাদের ড্রাগনে স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং প্রসাধনী গুণ থাকায় দিনদিন মহেশপুরে এর চাহিদা বাড়ছে।

এদিকে ১০০টির বেশি ড্রাগন ফলের বাগান করে সাড়া জাগিয়েছেন উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের গৌরিনাথপুর গ্রামের শিক্ষিত যুবককরা। যার ফলে এখানে হাজারো কৃষকের কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির পাশাপাশি বেড়েছে আর্থিক স্বচ্ছলতা। বর্তমানে এই গ্রামটি সবার কাছে ড্রাগনের গ্রাম হিসেবে পরিচিত।

গৌরিনাথপুর গ্রামের আই এ পাশ করা নজরুল ইসলাম সর্বপ্রথম সীমিত পরিসরে পরীক্ষা মুলক ড্রাগনের চাষ করেন। এর আগে এখানে বাদাম আর আম ছাড়া তেমন কোন ফলের চাষ হতো না।

নজরুল ইসলাম জানান, এক সময় ড্রাগনফল বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। এই ফলে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি গুণ আছে যা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারি এটা জেনে তিনি একটি আমবাগান কেঁটে সেখানে ড্রাগনের চাষ শুরু করেন। সে সময় একবিঘা জমি তৈরি করতে তার ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন অনেক কম টাকায় বাগান তৈরি করা যাচ্ছে। বর্তমানে তার ১৫ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ রয়েছে বলে জানান তিনি। তার দেখাদেখি এই গ্রামে ১০০ টিরও বেশি ড্রাগনের বাগান গড়ে উঠেছে।

ড্রাগন চাষ করা সোহাগ সরকার বলেন, আমি প্রথম বছরেই ড্রাগন চাষ করে সফলতা লাভ করেছি। এখন এক বিঘা জমি তৈরি করতে দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনাই কম খরচে বাগান তৈরি করতে পারি। আমার ৭বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ আছে । প্রথম দুই বিঘা ৫ কাঠা জমিতে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এখন এক বিঘা জমি তৈরি করতে মাত্র ১ লক্ষ ২০ হাজার লাগবে। তিনি আরও বলেন, ২ বিঘা বাগান থেকে ইতি মধ্যে ৩ লাখ টাকার ফল বিক্রি হয়েছে। বর্তমান বাগানে এখন ৪ লাখ টাকার মত ফল আছে।  এই বছরে এই বাগান থেকে তিন/চার বার ফল বিক্রি করতে পারবো। শুধু ড্রাগন ফল বেচে এই গ্রামে ২ কোটি টাকা আসবে বলে তিনি মনে করেন। তার মতে বর্তমান বাজার ব্যবস্থার দিকে সরকার একটু নজর দিলে তারা আরো বেশি লাভবান হবেন ও আরও বেশি বাগান তৈরি হবে বলে তিনি আশবাদী।

আজমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার খান জানান, আমার ইউনিয়নের গৌরিনাথপুর গ্রামে এই ড্রাগন চাষ সবচেয়ে বেশি। এর আগে মাত্র দুই জন চাষ করতো তারা  বেশি লাভবান হয়েছে। এখন গ্রামটি ড্রাগন গ্রাম নামেই পরিচিতি লাভ করেছে। তার মতে সরকার বাজার ব্যবস্থার উপর মনিটারিং করলে কৃষকরা বেশি উপকৃত হবে। তারা আরও বেশি লাভবান হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান আলী জানান, এ উপজেলাতে ৫০ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ হয়েছে। কিন্তু একটি গ্রামেই সব চেয়ে বেশি চাষ। আমি প্রতিনিয়ত ওই গ্রামের কৃষকদের খোঁজ খবর নিই এবং তাদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকি। ড্রাগন ফলে জিংক ও মিনারেলসহ পুষ্টি গুন বেশি। গত বছরের চেয়ে এ বছর দাম একটু কম তার পরও কৃষকরা লাভবান হবে বলে তিনি মনে করেন।

খুলনা গেজেট/ টি আই




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!