ন্যাক্কারজনক এক ঘটনা ঘটিয়েছেন পাকিস্তানের কিছু রাজনৈতিক নেতাকর্মী। এমন ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেছে বলে শোনা যায়নি। বৃহস্পতিবার তারা ইসলামের অতি গুরুত্বপূর্ণ ও আবেগের স্থান মসজিদে নববীতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, অন্য রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে চিৎকার করে স্লোগান দিয়েছেন। তুলেছেন আপত্তিকর সব মন্তব্য। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।
এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব সহ প্রতিনিধিদের একটি দল মসজিদে নববীতে প্রবেশ করেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর রওজা মোবারকে শ্রদ্ধা জানাতে তারা এদিন ওই মসজিদে যান। কিন্তু এরপরই ইসলামের অতি পবিত্র এই স্থাপনার ভিতরে তাদের বিরুদ্ধে উচ্চস্বরে স্লোগান দেয় একদল বিক্ষোভকারী। অভিযোগ আছে তারা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফের (পিটিআই)।
শেহবাজ শরীফ ও তার প্রতিনিধিরা তিনদিনের সফরে বৃহস্পতিবার সৌদি আরব সফরে গিয়েছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের আমন্ত্রণে। এ দলে রয়েছেন পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল, তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব, শাহজাইন বুগতি, মোহাসিন দাওয়ার, খালিদ মকবুল সিদ্দিকী, চৌধুরী সালিক এবং প্রধানমন্ত্রীর চারজন স্টাফ
শেহবাজ শরীফ ও তার প্রতিনিধিরা এদিন মসজিদে নববীতে প্রবেশ করার পর তাদেরকে দেখেই বিক্ষোভকারীরা ‘চোর চোর’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। মরিয়ম আওরঙ্গজেবকে উদ্দেশ্য করে আপত্তিকর মন্তব্য করতে থাকেন। তাকে হয়রান করেন। অনাকাঙ্খিত এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সঙ্গে সঙ্গে তা ভাইরাল হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা জেডব্লিউপি প্রধান এবং কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক মন্ত্রী শাহজাইন বুগতির সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। তার চুল ধরে টানতে থাকেন। পুরো ঘটনা তারা তাদের মোবাইল ফোন দিয়ে ধারণ করতে থাকে।
এর জবাবে শাহজাইন বুগতি বলেন, পবিত্র মক্কা ও মদিনাকে আমরা সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করি। সেখানে কেউ উচ্চস্বরে কথা পর্যন্ত বলেন না। যারা মরিয়ম আওরঙ্গের বিরুদ্ধে অবমাননাকর স্লোগান দিয়েছে তারা এখনও সেখানেই অবস্থান করছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারের খবর ভুয়া। অন্যদিকে ইমরান খানের নাম উল্লেখ না করে তার দিকে ইঙ্গিত করে মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেছেন, এই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তির নাম আমি বলতে চাই না। কারণ, আমি এই পবিত্র স্থানকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করতে চাই না। এসব মানুষ কিভাবে আমাদের সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এবং তার প্রতিকার বের করতে আমাদের সময় লাগবে। সেটা আমরা করতে পারবো ইতিবাচক মানসিকতার অধীনে। তিনি আরও বলেন, তার দল পিএমএলএন নেতৃত্ব নেতাকর্মীদেরকে তাদের আবেগকে সংবরণ করে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
ওদিকে এ ঘটনার পর রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারা, সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মসজিদে নববীর মতো পবিত্র স্থানে রাজনৈতিক স্লোগান দেয়ার কড়া নিন্দা জানিয়েছেন তারা।